সাংসদ তহবিলের টাকায় স্কুলে স্কুলে বৈদ্যুতিন পাখা দেওয়া হচ্ছে। আর তার দরপত্র আহ্বানেই স্বজনপোষণের অভিযোগ তুললেন এক ঠিকাদার। ঘটনাটি গড়বেতা-২ ব্লকের।
সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের সাংসদ উমা সরেন তাঁর সংসদ এলাকার বিভিন্ন স্কুলে বৈদ্যুতিন পাখা দিতে উদ্যোগী হন। সেই মতো গড়বেতা-২ ব্লকে ১৫৮০টি পাখার জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। পাখার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৩৬ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। ৫ জন ঠিকাদার দরপত্রে অংশ নেন। দু’জনের দরপত্র খোলাই হয়নি। যে তিনজন ঠিকাদারের দরপত্র খোলা হয় তাতে দেখা যায়, দু’জন বরাদ্দ অর্থের থেকে বেশি দর দিয়েছিলেন। একজন ৩৭ লক্ষ ৬৬৮০ টাকা ও অন্যজন ৩৬ লক্ষ ৭০ হাজার ৩৪০ টাকা। সুরজিৎ ঘোষ নামে এক ঠিকাদার দেন ৩৬ লক্ষ ৩৩হাজার ৬৩৬ টাকার দর। অর্থাৎ বরাদ্দ অর্থের থেকে ৩৬৪ টাকা কম। সেটিই গ্রাহ্য হয়েছে।
অভিযোগ, পছন্দের ঠিকাদারকে বরাত পাইয়ে দিতে অন্যদের দরপত্র খোলা হয়নি। দরপত্র বাতিলের কারণ হিসাবে প্রয়োজনীয় নথি ব্লক অফিসে জমা না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ, ই-টেন্ডেরে সব নথিই ‘অনলাইনে আপলোড’ করা হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদার কিশোর ঘোষের অভিযোগ, “সবই অনলাইনে আপলোড করা হয়েছে। তবু শুধুমাত্র নিজেদের পছন্দের ঠিকাদারকে বরাত পাইয়ে দিতে নথি জমা দেওয়া হয়নি জানিয়ে আমার দরপত্র গ্রহণই করা হল না।’’ কিশোরবাবুর দাবি, “আমি ৫.১৯ শতাংশ কম দামে দরপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু সেটি খোলাই হল না। কয়েকজন ঠিকাদার ও প্রশাসনিক কর্তাদের যোগসাজশে সরকারি অর্থের অপচয় করা হল।’’
কিশোরবাবু আইনজীবীর চিঠি পাঠিয়ে প্রশাসনের কাছে এর ব্যাখ্যাও চেয়েছেন। কিশোরবাবুর আইনজীবী তীর্থঙ্কর ভকত বলেন, “আমার মক্কেল অনেক কম দামে পাখা দিতেন। তবু নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাঁর দরপত্রটি বাতিল করা হল। এর মধ্যে দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছি। উপযুক্ত ব্যাখ্যা না পেলে আইনি পদক্ষেপ করব।”
গড়বেতা-২ ব্লকের বিডিও স্বপনকুমার দেব অবশ্য বলেন, “কেউ অভিযোগ করতেই পারেন। ব্যাখ্যাও চাইতে পারেন। তবে আমরা নিয়ম মেনেই দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেছি।’’