প্রতিশ্রুতি-ভঙ্গ: ব্যানারে রয়েছে প্রকল্পের কথা (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
সামনে বড় ব্যানার জানান দিচ্ছে, এই নার্সিংহোম রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী মান্যতাপ্রাপ্ত। অথচ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেও ফিরে যাতে হল। এমনই অভিযোগ উঠেছে তমলুকের শঙ্করআড়ার নিউ সারদাময়ী মেটারনিটি ও শিশু নিকেতন নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে।
রোগীর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও আহত শিশুকে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছিল। এমনকী শেষ মুগূর্তে জানানো হয়, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা দেওয়া যাবে না।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নার্সিংহোমের মালিক বিমল জানান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় তা করা যায়নি। তাই ওই রোগীকে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলা হয়।’’
নার্সিংহোম ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁথির জুনপুটের চেঞ্চুড়াপুট গ্রামের বাসিন্দা কর্ণ মণ্ডলের বাবা পেশায় দিন মজুর। বুধবার বিকেলে ওই কিশোর খেলার সময় পড়ে গিয়ে বাঁ হাতে আঘাত পায়। ওই দিনই সন্ধ্যায় তাকে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, কিশোরের বাম হাতের দুটি হাড় ভেঙেছে। অস্ত্রোপচারের জন্য তাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। তবে কিশোরকে নিয়ে তাঁর বাবা যান তমলুকের একটি নার্সিংহোমে।
কর্ণের বাবা দেবাশিস মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে বিনামূল্যে পরিষেবার কথা বলা হয়েছিল। রাতে অস্ত্রোপচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও সকালে জানানো হয়, অস্ত্রোপচারের উপযুক্ত যন্ত্র নেই। ফলে অস্ত্রোপচার করা যায়নি।’’ এরপর তিনি ছেলেকে তমলুকেরই অন্য একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানেই ১০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়।
কর্ণ বলে, ‘‘সারা রাত খুব বাতে ব্যথা হচ্ছিল। কিন্তু ওই নার্সিংহোমে কেউ অস্ত্রোপচার করল না।’’ কিন্তু তমলুক জেলা হাসপাতালে কেন নিয়ে গেলেন না ছেলেকে? সেখানে তো সহজেই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের পরিষেবা মিলত। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি দেবাশিসবাবু।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেন চিকিৎসা হল না খোঁজ নিচ্ছি। ওই কিশোরের পরিবার অভিযোগ জানায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’