মৃত্যুতেও বিভেদ মুছে দিলেন চাচা

বুধবার বিকেল তিনটে নাগাদ খড়্গপুরের সাউথসাইডে রেল বাংলোর বাসভবনে কাচের গাড়িতে পৌঁছয় চাচা জ্ঞানসিংহ সোহনপালের মরদেহ।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০
Share:

শ্রদ্ধা: চাচাকে প্রণাম। বুধবার খড়্গপুরের গোলবাজারে কংগ্রেস কার্যালয়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

আমৃত্যু তিনি ছিলেন জননেতা। কফিনবন্দি হয়ে জনতার মাঝেই ফিরলেন রেলশহরের চাচা। রাজ্যের মন্ত্রী-সাংসদ থেকে একেবারে আটপৌরে শহরবাসী, প্রবীণ রাজনীতিককে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর ভিড়ে মিলেমিশে গেলেন সকলে।

Advertisement

বুধবার বিকেল তিনটে নাগাদ খড়্গপুরের সাউথসাইডে রেল বাংলোর বাসভবনে কাচের গাড়িতে পৌঁছয় চাচা জ্ঞানসিংহ সোহনপালের মরদেহ। কান্নায় ভেঙে পড়েন ভাইপোর স্ত্রী ধরমজিৎ কৌর ও অন্য পরিজনেরা। এ দিন পাশের শহর মেদিনীপুরে সভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে তিনি বলেন, ‘‘জ্ঞানসিংহ সোহনপাল এই জেলার দীর্ঘ দিনের বিধায়ক ছিলেন। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দুই মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও চূড়ামণি মাহাতো চাচাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে যান। রাজীব জানান, চাচার অন্তিমযাত্রাতেও কোনও একজন মন্ত্রী থাকবেন।

এ দিন বাসভবন থেকে জ্ঞানসিংহের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গোলবাজারে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে। শেষ সময় পর্যন্ত এখানেই বেশিরভাগ সময়টা কাটাতেন চাচা। পরে কার্যালয়ের বাইরেই গুরুদ্বার থেকে পাঠানো বাতানুকূল কফিনে ঘেরা জায়গা শায়িত রাখা হয় দেহ। রাতভর এখানেই থাকবে কফিন।

Advertisement

চাচাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, “যাঁদের কাছে পরিষদীয় রাজনীতি শিখেছি, তাঁদের অন্যতম জ্ঞানসিংহ সোহনপাল।” সিপিএমের জেলা নেতা হরেকৃষ্ণ সামন্তও বলছিলেন, “পরিষদীয় গণতন্ত্রে চাচাজির ভূমিকা অনুসরণ করা উচিত।” চাচাকে দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষও। নারায়ণগড় থেকে আসা আদিবাসী সমাজকর্মী রবীন্দ্রনাথ সিংহ বলছিলেন, “উনি আমাদের সমাজের জন্যও অনেক কিছু করেছেন।” চাচার সঙ্গে কোনও দিন কথা হয়নি এমন মানুষও এসেছিলেন। শ্রদ্ধা জানান পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ, ডিআইজি (মেদিনীপুর রেঞ্জ) বাস্তব বৈদ্য। শহরের আজিজা হাইস্কুলের প্রায় আড়াইশো পড়ুয়া ও ১০ জন শিক্ষক এসেচিলে চাচার মরদেহে মালা দিতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন, “আমাদের স্কুলের প্রতিষ্ঠা থেকে উচ্চমাধ্যমিকস্তরে উন্নীত হওয়ার পিছনে চাচার অবদান ভুলতে পারব না। ওঁর মৃত্যু আমাদের কাছে গভীর ক্ষত।” আজ, বৃহস্পতিবার সকালে চাচার দেহ ফের বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে। দুপুরে মন্দিরতলা শ্মশানে হবে শেষকৃত্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement