পাঁশকুড়ায় কাঁসাই উপচে জলবন্দি প্রায় ৩০ হাজার

রাত ৮ নাগাদ পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুরে উড়িয়াগড় গ্রামের কাছে বাঁধের ফাটল দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। স্থানীয়রাই দেখতে পেয়ে খবর দেন সেচ দফতরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৪
Share:

সারাই: বাঁধ মেরামতিতে নেমেছেন গ্রামবাসী। বুধবার ছবি তুলেছেন পার্থপ্রতিম দাস

বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কংসাবতীর জল। ফাটল ধরছে নদীবাঁধে। মঙ্গলবার রাত থেকেই জল ঢুকতে শুরু করেছে একাধিক গ্রামে। পাঁশকুড়ার প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা এখন জলবন্দি।

Advertisement

আশঙ্কাটা ছিলই। সোমবার রাত থেকে কংসাবতীতে জল বাড়লেও তবে তা বিপদসীমার অনেক নীচে দিয়ে বইছিল। মঙ্গলবার বিকেলের পর হু হু করে জল বাড়তে থাকে। ওই রাতেই কাঁসাইয়ের জলে ডুবেছে পাঁশকুড়া পুরাতন বাজারের কাছে দক্ষিণ গোপালপুর ও উল্টোদিকের জয়কৃষ্ণপুর গ্রাম। দুই গ্রামের প্রায় ১০০ পরিবার এখন ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ও নদীবাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছে। দক্ষিণ গোপালপুরের বাসিন্দা তারক পণ্ডিত, শেফালি ধাড়ার অভিযোগ, সেচ দফতর বা প্রশাসন জল বাড়ার বিষয়ে আগাম সতর্কবার্তা দেয়নি। ফলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হঠাৎই জলে ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নেওয়ার সময়ও পাননি তাঁরা।

রাত ৮ নাগাদ পাঁশকুড়া ব্লকের ঘোষপুরে উড়িয়াগড় গ্রামের কাছে বাঁধের ফাটল দিয়ে জল ঢুকতে শুরু করে। স্থানীয়রাই দেখতে পেয়ে খবর দেন সেচ দফতরে। কর্মীরা পৌঁছনোর আগেই বাঁশ পুঁতে, মাটি ফেলে বাঁধ রক্ষার কাজে নেমে পড়েন স্থানীয় মানুষ। বুধবার সকালেও পুরাতন বাজার থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে ওই এলাকায় বাঁধের মেরামতির চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু লাভ হয়নি। বাঁধের ভিতর দিয়ে জল ঢুকেছে গ্রামে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন মান্নার অভিযোগ, ‘‘বর্ষার আগে সেচ দফতরের নজরদারি ঠিক থাকলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হত না।’’ যদিও সেচ দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার রঘুনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নজরদারিতে খামতি ছিল না। বরং কড়া নজরদারির ফলেই কাঁসাই, ক্ষীরাই ও ক্ষীরাই-বাক্সী, চণ্ডিয়া নদীর বাঁধে প্রায় ১৫০টি ছোটখাট গর্ত ধরা পড়েছে।’’ তাঁর দাবি পাঁশকুড়ার শেরহাটি এলাকায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত কাজ চলেছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।

জেলা সেচদফতর সূত্রে খবর, পাঁশকুড়ার কাছে কাঁসাই নদীর জলস্তরের চরম বিপদসীমা ৯.৯ মিটার। মঙ্গলবার রাতে তা বেড়ে ১০.৪০ মিটার পর্যন্ত উঠেছিল। ফলে কিছু এলাকা নদী বাঁধ উপচে জলমগ্ন হয়েছে। ক্ষীরাই নদীর জল উপচে বেগুনবাড়ি, হরিরামপুর, সরাইঘাট, নীলমণিরামচক, লক্ষাকুড়ি, আমদান, নোরাই, দুমদান, রাজহাটি, আড়র, লালচক গ্রাম মিলিয়ে ব্লকের প্রায় ৩০টি গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement