অখিল গিরি। — ফাইল চিত্র।
একই দিনে জোড়া অস্বস্তিতে কাঁথির গিরি পরিবারে। একজন দেশের মহিলা রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে দেশজুড়ে প্রবল সমালোচনার মুখে। অন্যজন, চিরকুটে কলেজে ছাত্র ভর্তি করানোর ঘটনায় অভিযুক্ত। কার্যত, শনিবার থেকে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের কারা প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরি এবং তাঁর ছেলে তথা কাঁথি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্রকাশ গিরি।
এমনিতেই নিয়োগ দুর্নীতিতে গোটা রাজ্যে চরম অস্বস্তিতে শাসক দল। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে নন্দীগ্রামের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে মন্ত্রী অখিল গিরি এবং তাঁর ছেলে সুপ্রকাশের বিরুদ্ধে ছাত্র ভর্তি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগ ওঠায় শাসক দলের উপরে সেই চাপ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্য দিনের তুলনায় একেবারেই রবিবার একেবারেই অচেনা ছবি কাঁথি শহরের থানা পুকুরপাড় এলাকায় গিরি বাড়িতে। নীচে বড় ঘরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। তবে দলের নেতা-কর্মীদের আনাগোনা তুলনায় কম ছিল। দুপুরে ছেলে সুপ্রকাশকে বাড়িতে বসে জনসংযোগ করতে দেখা গেলেও দিনভর দেখা মেলেনি মন্ত্রীর। নিজের বিধানসভা কেন্দ্র রামনগরেও যাননি অখিল। সুপ্রকাশও কোনও কর্মসূচিতে ছিলেন না। তবে সারাদিনে দু’টি পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুক দেওয়ালে। সেখানে কোথাও সুপ্রকাশ লিখেছেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে। সবকিছু সময়ের অপেক্ষা। কোনওভাবেই মাথা নত করবেন না’। আবার বিকেলে বাবা অখিল গিরির সমর্থনে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। যেখানে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের আদিবাসী মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে অসম্মানজনক কথাবার্তা বলতে শোনা গিয়েছে (ভিডিওর সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)।
এদিন কাঁথিতে অখিলের মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল করে তপসিলি জাতির মানুষজন। বিকেলে পুরসভা অফিসের সামনে থেকে শুরু হয় মিছিল। পরে বড় ডাকঘরের সামনে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, ‘‘ওরা হচ্ছে তৃণমূলের এক একজন সম্পদ। তাই বাবা এবং ছেলে দুজনকেই অবিলম্বে তাদের সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। সাধারণ মানুষ সব বুঝে গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে এই ধরনের কুকীর্তির যোগ্য ফল পেয়ে যাবে তৃণমূল।’’
গেরুয়া শিবিরের দাবি মানতে নারাজ শাসক দল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটের কয়েক মাস বাকি। রাজ্য নেতৃত্ব সব কিছুই দেখছেন এবং তাঁরাই এ সম্পর্কে বিবৃতি দিচ্ছেন।’’