পদোন্নতি না হওয়া, বেতন কাঠামোয় বৈষম্য ও একই কর্মীকে দিয়ে একাধিক কাজ করানোর অভিযোগে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসলেন খড়্গপুর আইআইটি-র হল (হস্টেল)-এর স্থায়ী কর্মীরা। বুধবার রাতে আইআইটি-র ‘হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’-এর সামনে অবস্থানে বসে ‘রেসিডেন্সিয়াল হল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সদস্য হল কর্মীরা। গত বছর জানুয়ারি মাসে একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তারা। হল কর্মীদের দাবি, মাস ছ’য়েক আগে আইআইটি কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন করে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। তাই দাবি পূরণের লক্ষেই ফের অবস্থানে বসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আইআইটি-র পড়ুয়াদের থাকার জন্য বিভিন্ন হল (হস্টেল)-এ এই কর্মীরা কাজ করেন। আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ‘হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার’-এর কর্মচারীদের প্রতিনিধি নির্বাচনে জয়ী হয় রেসিডেন্সিয়াল হল ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের সদস্য হল কর্মীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো মেনে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে না। নতুন কর্মী নিয়োগ না করে একই ব্যক্তিকে দিয়ে একাধিক কাজ করানো হচ্ছে। এমনকী কর্মীদের পদোন্নতির ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় সরকারের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের নিয়ম না মানার অভিযোগও উঠছে। আইআইটি কর্তৃপক্ষ সব জেনেও নির্বিকার।
গত বছর জানুয়ারি মাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থানে বসে কর্মীরা। আইআইটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কয়েক দফা আলোচনাও হয়। এর পরেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত জুলাইয়ে ফের আন্দোলনে নামেন তাঁরা। কর্মীদের দাবি, গত বছরের শেষ দিকে আন্দোলনের জেরে আইআইটি কর্তৃপক্ষ একটি কমিটি গঠন করেন। কর্মীদের দাবি, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও তা হয়নি।
দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার রাত থেকে ফের অবস্থানে বসে রেসিডেন্সিয়াল হল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সদস্যরা। আপাতত কাজ বন্ধ না করে রিলে করে কর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মী সংগঠনের সভাপতি প্রদীপ ধর বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কর্মীরা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। গত বছর আন্দোলনের পরে কমিটি গঠন করে ফেব্রুয়ারিতে দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু চেয়ারম্যান বদলের পর থেকে গড়িমসি চলছে।’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘২০ জুনের মধ্যে সমস্যা না মিটলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।” হল ম্যানেজমেন্ট সেন্টার-এর চেয়ারম্যান শিক্ষক পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। আইআইটি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে।” আইআইটির রেজিস্ট্রার প্রদীপ পাইন বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। নিশ্চয় সমস্যার সমাধান হবে।”