কুরবান শা।—ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের ঘটনা থেকে শিক্ষা। জেলার যে সমস্ত রাজনৈতিক নেতা ও জন প্রতিনিধিদের নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে, পুজোর সময় তাঁরা ইচ্ছেমতো রক্ষীকে ছুটিতে পাঠাতে পারবেন না। কোনও রক্ষী পুজোয় ছুটি নিতে চাইলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট থানা বা রিজার্ভ ইনস্পেক্টরকে জানাতে হবে। বিকল্প রক্ষী মোতায়েন হলে তবেই মিলবে ছুটি। কড়া নির্দেশ জেলা পুলিশের।
গত বছর দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে দলীয় কার্যালয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছিলেন তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কুরবান শা। কুরবানের সরকারি নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও পুজোর জন্য তিনি নিজে ওই নিরাপত্তারক্ষীকে ছুটি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তারই সুযোগ নিয়ে দুষ্কৃতীরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে খুন করে কুরবানকে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে এ বার কড়া নির্দেশ জেলা পুলিশের।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সমস্ত বিধায়ক ও সাংসদ ছাড়াও যে সমস্ত নেতা বা জন প্রতিনিধির উপরে আক্রমণের আশঙ্কা থাকে তাঁরা পদ অনুযায়ী সরকারি নিরাপত্তারক্ষী পান। নিরাপত্তারক্ষীদের রিভিউ মিটিংয়ে বলে দেওয়া হয়েছে পুজোর যে সব দিনে যাঁরা ছুটি নেবেন তাঁদের আগে থেকে সংশ্লিষ্ট থানা বা রিজার্ভ ইনস্পেক্টরকে ছুটির আবেদন করতে হবে। যিনি ছুটির আবেদন করবেন তাঁর জায়গায় অন্য রক্ষী দায়িত্ব নিলে তবেই তিনি ছুটি পাবেন। এই মর্মে জেলার সমস্ত থানাকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানান হয়েছে। যে সমস্ত নেতা বা জন প্রতিনিধির একজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে কোনওভাবেই বিকল্প রক্ষী ছাড়া একজনকে ছুটি দেওয়া যাবে না।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে খুন হন নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাস। সেই সময় বিধায়কের নিরাপত্তারক্ষী ছুটিতে ছিলেন বলে অভিযোগ। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শা খুনের ঘটনাতেও উঠে এসেছিল একই তত্ত্ব। সামনেই দুর্গাপুজো। শুরু হতে চলেছে টানা উৎসবের মরসুম। তার ওপর আবার কয়েক মাস পরে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সব মিলিয়ে জেলায় যাতে আর এ ধরনের কোনও ঘটনা না ঘটে সে জন্য সতর্ক পুলিশ।
তমলুকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম হাসান বলেন, ‘‘আমার নিরাপত্তা রক্ষীদের রিভিউ মিটিংয়ে বলে দিয়েছি পুজোর সময় ছুটি নিতে হলে আগে থেকে জানাতে হবে। বিকল্প রক্ষী মোতায়েন করার পর ছুটি মিলবে।যাঁরা নিরাপত্তারক্ষী পান তাঁদের কোনওভাবেই রক্ষীবিহীন করা যাবে না। এটা শুধু পুজো বা উৎসবের সময় নয়, সারা বছর ধরেই এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।’’