পরিযায়ী পাখিদের ঠাঁই গড়তে এগিয়ে এল প্রশাসন

কেন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা বিধান মাহাতর বাড়ির উঠোনের তেঁতুল গাছে প্রতি বছর এই ‘অতিথি’-দের দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। বিধানবাবু জানান, কয়েকশো বছর ধরে পাখিরা আসছে। কোনও বার পাখিরা আসেনি এমনটা হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জামবনি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ১২:৪৫
Share:

পরিযায়ী: কেন্দুয়া গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

পরিযায়ী পাখিদের ঠাঁই গড়তে উদ্যোগী হয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার জামবনি ব্লক প্রশাসন। বর্ষার মরসুমে জামবনি ব্লকের কেন্দুয়া গ্রামের রাস্তার ধারে, পুকুর পাড়ে, গেরস্থের আঙিনায় লাগানো হবে কয়েকশো তেঁতুলগাছ। এই কেন্দুয়া গ্রামেই এক গৃহস্থের উঠোনের দু’টি তেঁতুল গাছে প্রতি বছর বর্ষার আগে ঝাঁকে ঝাঁকে এসে বাসা বাঁধে শামুকখোল। বর্ষা শুরু হলেই গাছের ডালে বাসায় ডিম পাড়ে স্ত্রী শামুকখোল। ভরা বর্ষায় ডিম ফুটে বের হওয়া ছানারা এক সময় উড়তে শেখে। হেমন্তের শুরুতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির দল ফিরে যায় নিজেদের ডেরায় অন্য কোনও দেশে।

Advertisement

কেন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা বিধান মাহাতর বাড়ির উঠোনের তেঁতুল গাছে প্রতি বছর এই ‘অতিথি’-দের দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। বিধানবাবু জানান, কয়েকশো বছর ধরে পাখিরা আসছে। কোনও বার পাখিরা আসেনি এমনটা হয়নি। আগে বাবা, ঠাকুর্দা (দু’জনেই প্রয়াত) এবং তাঁদের পূর্বপুরুষরা পাখিদের দেখভাল করেছেন। গাদাবন্দুক নিয়ে রাতে পাখি পাহারা দেওয়ার জন্য যতীন্দ্রনাথবাবু একবার সেরা পরিবেশ কর্মীর পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছিল।

সময়ের সঙ্গে বদলে গিয়েছে পরিবেশ। কয়েকশো বছরের পুরনো তেঁতুল গাছগুলি আর আগের মতো শক্তপোক্ত নেই। গাছ ভেঙে পড়লে পাখিরা থাকবে কোথায়! বিধানবাবুর মাথাব্যথা এখন সেটাই। ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরার প্রবীণ পরিবেশ কর্মী দিলীপ দাস সম্প্রতি এ ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরের প্রাক্তন উপ-অধিকর্তা দিলীপবাবু নিজের উদ্যোগে ঝাড়গ্রাম শহরে সবুজায়নের কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দুয়া গ্রামের তেঁতুল গাছ দু’টির বয়স হয়েছে। কাছে পিঠে উপযুক্ত তেঁতুলগাছ নেই। পুরনো গাছদু’টি ভেঙে পড়লে পাখিরা ঠাঁইনাড়া হয়ে যাবে। তাই বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনেছি।” বিধানবাবুর বক্তব্য, পাখিদের নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রশাসনের ভেবে দেখা উচিত।

Advertisement

জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমীর ধল বলেন, “কেন্দুয়া গ্রামে পুকুর পাড়ে, সরকারি ফাঁকা জায়গায় শ’দুয়েক তেঁতুল গাছের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। গ্রামবাসীরা লিখিত আবেদন করলে ব্যক্তিগত জমিতেও তেঁতুল চারা লাগানো হবে। পাখি পাহারা দেওয়ার জন্য প্রশাসনিকস্তরে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement