সতর্ক: গাড়ি দাঁড় করিয়ে চলছে স্প্রে। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে জেরবার রাজ্যবাসী। এর মধ্যেই ফের নতুন করে বার্ড ফ্লু ছড়িয়েছে ওড়িশায়। পড়শি রাজ্য থেকে বার্ড ফ্লু-র ভাইরাস পশ্চিমবঙ্গে যাতে কোনও ভাবে প্রবেশ করতে না পারে, সে দিকে সজাগ প্রশাসন। তাই রাজ্য এবং জেলা প্রশাসন তথা প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের নির্দেশে জাতীয় সড়কের ওপর দাঁতনের ঘোলাইতে চলছে গাড়ি দাঁড় করিয়ে স্প্রে করে ভাইরাস ডিস-ইনফেকশন করার কাজ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন একেবারে ওড়িশা সীমানায় অবস্থিত। খড়্গপুর-বালেশ্বর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে বহু গাড়ি যাতায়াত করে। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর জানাচ্ছে, ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ— এই সময়ে জীব ও প্রাণীর ক্ষেত্রেই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তাই এই সময়টা সচেতন থাকা প্রয়োজন। আপাতত ওড়িশা থেকে পোল্ট্রি ও পোল্ট্রি প্রোডাক্ট নিয়ে আসা গাড়িগুলির ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। ভাইরাস ডিস-ইনফেকশনের জন্য বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড, মাইক্রোজেন, ফর্মাল-ডি-হাইড, চুন, ব্লিচিং স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এই ডিস-ইনফেকশন করার কাজ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সারাদিন ধরেই চলছে ভাইরাস ডিস-ইনফেকশনের কাজ। তবে রাতে গাড়িগুলিকে দাঁড় করিয়ে রেখে সকালে সংশোধনের কাজ চালানোর পর পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। শুধু প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরই নয়, দাঁতন পুলিশের সহযোগিতায় চলছে এই সংক্রমণ আটকানোর কাজ। দাঁতন ১ ব্লক প্রাণী সম্পদ বিকাশ আধিকারিক রবিন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মূলত ওড়িশায় বার্ড ফ্লু-এর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সেই সংক্রমণ যাতে বাংলায় প্রবেশ করতে না পারে, সে কারণেই এই কর্মসূচি। রাজ্য এবং জেলা দফতর থেকে ফের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এই কাজ চলবে।’’
তবে ওড়িশায় ফের বার্ড ফ্লু সংক্রমিত হলেও এ রাজ্যে তথা দাঁতন বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় এখনও তার কোনও প্রভাব পড়েনি বলেই সংশ্লিষ্ট দফতর জানিয়েছে। রাজ্যের পোল্ট্রি ফার্মগুলি যাতে সংক্রমিত না হয়, সেদিকে সদর্থক ভূমিকা নিচ্ছে দফতর। প্রতিদিন পালা করে তিনজন এই কাজে যুক্ত। কোন গাড়িগুলির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে? দফতর জানিয়েছে, বিশেষ করে ওড়িশা থেকে আসা মুরগি এবং মুরগি জাত পণ্য বহন করে আনা গাড়িগুলিকে ভাল করে ভাইরাস মুক্ত করার কাজ চালানো হচ্ছে। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের জেলা উপ-অধিকর্তা তুষারকান্তি সামন্ত জানান, ‘‘এতে ওড়িশাও সচেতন হবে। তবে প্রতিবছর এই সময়েই কর্মসূচি নেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই সময়ে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ে।’’