কুশমণ্ডির ধর্ষণ-কাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব আদিবাসীরা

কুশমণ্ডির ঘটনায় ফের ক্ষোভ ছড়িয়েছে আদিবাসীদের মধ্যে। দু’দিন আগেই অরণ্যশহরে মিছিল করেছেন আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরা। এবার আদিবাসী সংগঠনটির পক্ষে রবিনবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাতে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫২
Share:

এ বার কুশমণ্ডিতে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিল সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’। এ ব্যাপারে সাংগঠনিকস্তরে সিদ্ধান্ত নিয়ে আদিবাসী সংগঠনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং এলাকায় পোস্টার দিয়ে জানিয়েছে, আদিবাসী বিধায়ক ও সাংসদেরা ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিধানসভায় ঘটনার প্রতিবাদ না জানালে আদিবাসী এলাকায় তাঁদের যেন ঢুকতে না দেওয়া হয়। ভোট চাইতে গেলে জাতীয় অস্ত্র (তির ধনুক) নিয়ে ওই জনপ্রতিনিধিদের তাড়া করার নিদান দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে ওই সব আদিবাসী জনপ্রতিনিধিদের আদিবাসী সমাজ থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আদিবাসী এই সংগঠনের মুখপাত্র রবিন টুডু জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে এবং এলাকায় পোস্টার দিয়ে আদিবাসী জনগণের প্রতি এই আবেদন জানানো হচ্ছে। রবিনবাবু বলেন, “আমাদের ভোটে জিতে আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করব না। বিধায়ক, সাংসদরা তো আমাদের কথা ভাবেনই না। এলাকার সাংসদ তো গত পাঁচ বছরে আদিবাসী মানুষের জন্য একটা শব্দও খরচ করেননি।”

ঘটনা হল, বছর খানেক ধরে সাঁওতালি শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে ক্ষুব্ধ জঙ্গলমহলের আদিবাসী সমাজ। আদিবাসী সংগঠনটির পক্ষ থেকে বার কয়েক পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার প্রশাসনিক মহলে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। গত বছর সরকারি ‘হুল দিবস’ বয়কট করেন আদিবাসীরা। মাতৃভাষায় পড়াশোনার উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ার দাবিতে গত দশ মাসে জঙ্গলমহলে বিক্ষোভ-অবরোধ কর্মসূচি, স্কুলে তালা লাগিয়ে দেওয়ার মতো নানা আন্দোলন করেছেন আদিবাসীরা।

Advertisement

আদিবাসীদের ক্ষোভে প্রলেপ দিতে দু’বার তাঁদের সামাজিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সাঁওতালি মাধ্যমের স্কুলগুলিতে স্থায়ী শিক্ষক ও পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে সরকারিস্তরে গড়িমসি হচ্ছে বলে অভিযোগ আদিবাসীদের। কুশমণ্ডির ঘটনায় ফের ক্ষোভ ছড়িয়েছে আদিবাসীদের মধ্যে। দু’দিন আগেই অরণ্যশহরে মিছিল করেছেন আদিবাসী ছাত্রছাত্রীরা। এবার আদিবাসী সংগঠনটির পক্ষে রবিনবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাতে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে শাসক দল। ঝাড়গ্রামের বিধায়ক তথা ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুকুমার হাঁসদা বলেন, “পোস্টারের বিষয়ে কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখব। মুখ্যমন্ত্রী ও আমাদের দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কুশমণ্ডি নিয়ে যা বলার বলেছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement