প্রতীকী ছবি।
জেলে বসেই মোবাইলের সাহায্যে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠল রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু হত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সঞ্জয় প্রসাদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে সঞ্জয়কে গ্রেফতার দেখাতে বুধবার খড়্গপুর টাউন পুলিশ মেদিনীপুর জেলা আদালতে আবেদন করেছে।
রেলমাফিয়া রামবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সঞ্জয় বর্তমানে বাঁকুড়া জেলা সংশোধনাগারে বন্দি। পুলিশের দাবি, ওই সংশোধনাগার থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি মোবাইল। এর মধ্যে একটি মোবাইল ব্যবহার করে সঞ্জয় যোগাযোগ করত খড়্গপুরে তার সহযোগীদের সঙ্গে। সেই সহযোগীরাই সঞ্জয়ের নির্দেশ মেনে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলা আদায় করত। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “বাঁকুড়া জেল থেকে সঞ্জয় নামে ওই যুবক ফোনে খড়্গপুরের কিছু মানুষকে হুমকি দিয়ে তোলাবাজি চালাচ্ছিল। তদন্ত চলছে। আমরা ওকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছি। সেই গ্রেফতারের পরে তদন্তের পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে।” টাউন পুলিশের দাবি, সঞ্জয়কে গ্রেফতার দেখানোর পরে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাবতীয় ঘটনার তদন্ত চালানো হবে। বাঁকুড়া সংশোধনাগার সূত্রের খবর, যে তিনটি মোবাইল উদ্ধার হয়েছে সেগুলি মলুক চাঁদ শেখ নামে এক বন্দির। মঙ্গলবার বাঁকুড়া সদর থানায় মুলুকচাঁদের বিরুদ্ধে নিয়ম ভেঙে মোবাইল রাখার অভিযোগ দায়ের করেছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
রেলশহরের ওল্ড সেটলমেন্টের বাসিন্দা সঞ্জয় ২০১৭ সালে শ্রীনু খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়। এখন বাঁকুড়া সংশোধনাগারের ২ নম্বর ওয়ার্ডে সঞ্জয়ের সহবন্দি ছিল মুলুকচাঁদ। পুলিশের দাবি, জেলে বসেই মোবাইল ফোনে খড়্গপুরে নিজের ভাই অজয় প্রসাদ, সুধীর সাহা-সহ কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তোলাবাজি নিয়ন্ত্রণ করত সঞ্জয়। ব্যবসায়ীদের একাংশ তোলাবাজির মৌখিক অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। কিন্তু কেউই লিখিত অভিযোগ করতে রাজি ছিলেন না। গত ৩০ সেপ্টেম্বর খড়্গপুরের এসডিপিও সুকমল দাস খড়্গপুর টাউন থানায় একটি স্বতঃপ্রণোদিত তোলাবাজির মামলার দায়ের করেন। তদন্তে সঞ্জয়ের ভাই সুধীর সাহা, কে জগন্নাথ ওরফে চুন্নু-সহ কয়েকজনের উপর নজরদারি রাখতে শুরু করে পুলিশ। তিনজন গ্রেফতারও হয়। ধৃতদের মোবাইলের কললিস্ট পরীক্ষা করে একটি নম্বর পায় পুলিশ। সম্প্রতি ওই নম্বরটির টাওয়ার লোকেশন বাঁকুড়া দেখানোয় সন্দেহ হয় পুলিশের। তার পরেই মঙ্গলবার বাঁকুড়ার জেলে গিয়ে সঞ্জয়কে জেরা করে খড়্গপুর টাউন থানার পুলিশ। জেরা চলাকালীন জেলের শৌচাগারে থাকা তিনটি মোবাইল বাজেয়াপ্ত হয়।
এই ঘটনার পর ফের সামনে আসছে পুরনো প্রশ্ন। নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে সংশোধনাগারে পৌঁছে যাচ্ছে মোবাইল? বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।