খাদান ক্ষোভে আগুন

মহিলাদের কটূক্তি, পাল্টা মার

শনিবার সকালে উত্তেজিত গ্রামবাসীর সঙ্গে খাদান শ্রমিকদের গন্ডগোল বাধে। মারপিটে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। অস্থায়ী একটি  চালায় আগুন ধরিয়ে দেয় গ্রামবাসী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৬
Share:

বালি খাদানের অস্থায়ী ছাউনিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র

ফের বালি খাদানে মহিলাদের কটূক্তি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পড়ল। ইসনগরের পরে এ বার তেতে উঠল চন্দ্রকোনার কেশেডাল।

Advertisement

শনিবার সকালে উত্তেজিত গ্রামবাসীর সঙ্গে খাদান শ্রমিকদের গন্ডগোল বাধে। মারপিটে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। অস্থায়ী একটি চালায় আগুন ধরিয়ে দেয় গ্রামবাসী। বালি খাদান বন্ধ করার দাবিতে স্থানীয় ভৈরবপুর-কেশেডাল রাস্তায় অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখানো হয়। ঘটনায় দু’পক্ষের চারজন জখম হয়েছেন। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। আপাতত ওই খাদান থেকে বালি তোলা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে গোটা এলাকা থমথমে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা করা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার সকালে শিলাবতী নদীতে স্নান, বাসন ধোওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন জনা কয়েক মহিলা। তখনই ঘাট ঘেঁষা বালি খাদান থেকে কয়েকজন শ্রমিক ওই মহিলাদের লক্ষ করে কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। মহিলারা প্রতিবাদ করলে উত্তেজনা তৈরি হয়।

Advertisement

পরিস্থিতি সামলাতে নামানো হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। গোলামালের জেরে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে কেশেডালের বালি খাদান। ছবি: কৌশিক সাঁতরা

কেশেডাল গ্রামে খবর রটতে দেরি হয়নি। এর আগেও খাদান থেকে মহিলাদের উদ্দেশে কটূক্তির অভিযোগ ঘিরে অশান্তি হয়েছে। এ দিনও নিমেষে বালি খাদান ঘিরে নেয় কয়েকশো গ্রামবাসী। খাদান পক্ষও লোক জড়ো করে। তারপর দু’পক্ষ মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়।

বালির কারবার নিয়ে এমনিতেই নানা অভিযোগ ও ক্ষোভ রয়েছে। ঘাট লাগোয়া রাস্তায় অনবরত বালি বোঝাই ট্রাক্টর, বড় লরি যাতায়াতের ফলে বিরক্ত গ্রামবাসী। তার উপর রয়েছে ইভটিজিং, মহিলাদের কটূক্তির মতো অভিযোগ। শাসক দলের একাংশ নেতার মদতে বালি মাফিয়াদের রমরমা বলেই অভিযোগ। এ দিনের গোলমালে নিত্যানন্দপুর-সহ আশাপাশের গ্রামের বসিন্দারাও কেশেডালের সমর্থনে বেরিয়ে আসেন। খাদান বন্ধের দাবিতে বালি বোঝাই লরি-ট্রাক ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। অশান্তি চলাকালীন খাদান ব্যবসায়ীদের ব্যবহৃত একটি চালায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে চন্দ্রকোনা থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘাটালের এসডিপিও কল্যাণ সরকার নিজেও যান। ঘন্টা দুয়েক পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনার পরেও চন্দ্রকোনায় বেআইনি বালি কারবারে দাঁড়ি পড়েনি। দিন-রাত নদী থেকে বালি তুলে পাচার হয়ে যাচ্ছে। মাস দুয়েক আগে ইসনগরে খাদান কর্মী ও গ্রামবাসীদের লড়াইয়ে কেশেডালের বালি খাদানটি বন্ধ ছিল। ক’দিনই হল,ওই খাদান থেকে বালি তোলা শুরু হয়েছে। চন্দ্রকোনা-২ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জানিয়েছে, কেশেডালের ওই খাদানের বৈধ অনুমতি রয়েছে। তবে গ্রামবাসীর আপত্তিতে শনিবার থেকে ওই খাদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement