মঙ্গলবার পুজোর উদ্বোধনে মামনি। নিজস্ব চিত্র
সমাজে বহু মানুষের চোখেই তাঁরা উপেক্ষিত। কিন্তু আমজনতার গতানুগতিক সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে ভাঙল পাঁশকুড়ার নস্করদিঘির একটি পুজো কমিটি। তাদের কালীপুজোর উদ্বোধন করলেন এক বৃহন্নলা।
পাঁশকুড়ার নস্করদিঘি আমরা ছাত্রদলের পুজোর এবার ২৭তম বর্ষ। তাই পুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভিড় করেছিলেন এলাকার মানুষজন। সেই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পাঁশকুড়া বৃহন্নলা সমাজের অন্যতম বরিষ্ঠা মামনি দিদি। অন্য আমন্ত্রিতদের পাশেই সন্ধ্যা ৭টায় পুজোর ফিতে কাটলেন তিনি। অনুষ্ঠানে কন্যা সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষিত করে তোলার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। পুজোর উদ্বোধন করে খুবই আনন্দিত মামনি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এই পুজো উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পুজো কমিটি এবং এলাকার মানুষজন আমাদের বিশেষ স্বীকৃতি দিলেন। আমি এই সম্মান পেয়ে খুবই খুশি।’’
বৃহন্নলাদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সেই রায়কে মান্যতা দিয়ে তাঁরা এই পদক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে পুজো কমিটি। ওই পুজো কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ গিরি বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া এলাকায় বহু বৃহন্নলা থাকেন। অনেকেই ওঁদের তাচ্ছিল্যের নজরে দেখেন। ওঁরা যে আমাদেরই একজন, তা বোঝাতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’’ পুজো কমিটির ওই উদ্যোগে খুশি এলাকাবাসীও। নস্করদিঘি গ্রামের এক বাসিন্দা তপন পণ্ডা বলেন, ‘‘গ্রামের সমস্ত মানুষ ওই পুজোয় যোগ দিই। এলাকায় বহু বৃহন্নলা বাস করেন। সমাজ গঠনে ওঁদেরও ভূমিকা রয়েছে। ওঁদের হাতে উদ্বোধন করিয়ে সমাজে সেই বার্তায় আমরা বোঝাতে চেয়েছে।’’
পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সাত দিনে ধরে এলাকার বাসিন্দাদের মনোরঞ্জনের জন্য থাকছে নানা অনুষ্ঠান। তবে এ দিনে মামনির উপস্থিত সে সবের থেকেও সেরা বলে দাবি উদ্যোক্তাদের।