—প্রতীকী চিত্র।
বিজয়া দশমীর দিন থেকে নিখোঁজ এক তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার হল বাড়ির শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্কে। রবিবার সন্ধ্যায় চণ্ডীপুর থানার কাণ্ডপশরা গ্রামের ওই ঘটনায় পুলিশ তরুণীর স্বামীকেই গ্রেফতার করল। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কাণ্ডপশরা গ্রামের বাসিন্দা বিল্লু মাইতি কলকাতায় একটি খাবারের দোকানে কাজ করত। ওই এলাকায় অন্য একটি দোকানে কাজ করতেন পূজা কুমারী (২৪)। তাঁর বাড়ি হাওড়ায়। বিল্লু বিবাহিত। বাড়িতে তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী রয়েছে। এর পরেও কাজের এলাকায় বিল্লুর সঙ্গে আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল পূজার। পরে কয়েক বছর আগে বিল্লু দ্বিতীয় বার পূজাকে বিয়েও করেছিল। তাদের চার বছরের এক কন্যা সন্তানও রয়েছে। মাঝে মধ্যেই পূজা চণ্ডীপুরের কাণ্ডপশরায় এসে থাকতেন।
এবার পুজোর সময় কাণ্ডপশরার গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন পূজা। কিন্তু বিজয়া দশমীর দিন পূজা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি। বিল্লুও সেই রাতে বাড়ি ফেরেনি বলে অভিযোগ। এ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়েছিল। রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয়েরা বিল্লুর বাড়ির পিছনে থাকা শৌচাগার থেকে পচা দুর্গন্ধ পান। স্থানীয়েরা চণ্ডীপুর থানায় ঘটনার কথা জানান। চণ্ডীপুর থানার পুলিশ সেখানে যায়। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ওই শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে এক মহিলার পচগলা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরেই পুলিশ জানতে পারে, ওই দেহ পূজার। ওই তরুণীকে খুন করার পর মৃতদেহ সেপটিক ট্যাঙ্কের ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলেই পুলিশের অনুমান। পরে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে রবিবার রাতেই বিল্লুকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিল্লু তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী থাকার কথা গোপন করেই পূজাকে বিয়ে করেছিল। বিল্লুর সন্দেহ হয়েছিল, ওই তরুণী চণ্ডীপুরের কাণ্ডপশরার বাড়িতে আসার সুবাদে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই কারণে বিল্লু পূজার উপর ক্ষুদ্ধ ছিল। পরিকল্পিতভাবে বিজয় দশমীর দিনে সে ওই তরুণীকে খুন করে বাড়ির পিছনে থাকা সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে সেপটিক ট্যাঙ্কের উপরে শুকনো গাছের ডালপালা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে, গত কয়েক দিন ধরেই বিল্লু ও তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। ফলে বিষয়টি সামনে আশেনি। রবিবার সন্ধ্যায় সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়েছিল।
ওই তরুণীকে খুনের ঘটনায় বিল্লুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাড়িতে ছিল কি না বা জড়িত রয়েছে কি না, তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। চণ্ডীপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীকে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তাঁর স্বামী বিল্লু মাইতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তদন্ত করা হচ্ছে।