Honeybee

মৌমাছির কামড়ে হাসপাতালে, সাদা খাতা জমা পরীক্ষার্থীর

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখেই মৌমাছি হানায় গুরুতর আক্রান্ত হলেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও ক্রমেই অসুস্থতা বাড়তে থাকায়, শেষমেশ পরীক্ষার আয়োজন হল হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৮
Share:

পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখেই মৌমাছি হানায় গুরুতর আক্রান্ত হলেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। প্রতীকী চিত্র।

গাছপালায় ঘেরা স্কুল চত্বর, আর সেই স্কুলেই হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাকেন্দ্র। এ বার সেই পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখেই মৌমাছি হানায় গুরুতর আক্রান্ত হলেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। প্রাথমিক চিকিৎসার পরেও ক্রমেই অসুস্থতা বাড়তে থাকায়, শেষমেশ পরীক্ষার আয়োজন হল হাসপাতালে। পরীক্ষা শেষের আগে কার্যত সাদা খাতা জমা দিলেন ওই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী!

Advertisement

শনিবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার চতুর্থ দিনে খড়্গপুরের হিজলি হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রে এমনই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। এ দিন শহরের ছত্তিসগঢ় হাইস্কুলের ছাত্রী রিচা শর্মা এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে ছত্তিসগঢ় হাইস্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্র নির্ধারিত হয়েছে হিজলি হাইস্কুল। গত দু’দিন প্রথম দুই ভাষার পরীক্ষা দিয়েছিলেন রিচা। তবে এ দিন গাছপালা ঘেরা আইআইটি চত্বরে থাকা হিজলি হাইস্কুলের গেটের বাইরে এক ঝাঁক মৌমাছির হানায় আক্রান্ত হন রিচা ও তাঁর মা পুনম শর্মা। এরপর পরীক্ষাকেন্দ্রে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বিষয়টি জানালে তাঁরা পরীক্ষাকেন্দ্রের ইন-চার্জের কাছে নিয়ে যান। তার পরেই রিচাকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় আইআইটির বি সি রায় হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে রিচাকে ফের পরীক্ষাকেন্দ্রে ফিরিয়ে এনে আলাদা ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়। তবে অসুস্থতা বাড়তে থাকে ওই পরীক্ষার্থীর। বারবার বমি করতে থাকায় পরীক্ষাকেন্দ্রের পক্ষ থেকে ঝুঁকি না নিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সেখানে গিয়েও বমি থামেনি রিচার। দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি ইঞ্জেকশন। হাসপাতালের বিছানাতেই ব্যবস্থা হয় পরীক্ষার। পরীক্ষাকেন্দ্রের ইন-চার্জ তথা হিজলি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলে এসে মেয়েটি ও তার মা জানায় ওই পরীক্ষার্থীকে মৌমাছি কামড়েছে। আমরা বি সি রায় হাসপাতালে চিকিৎসা করে আলাদা ঘরে পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। তবে মেয়েটি বারবার বমি করতে থাকায় ঝুঁকি না নিয়ে মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই পরীক্ষার বন্দোবস্ত হয়েছে।”

Advertisement

অবশ্য পরিবারের দাবি, এ দিন অসুস্থতার জেরে পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না ওই পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা দিতে গিয়ে বারবার ঝিমিয়ে পড়ছিলেন তিনি। শুরু হয় স্যালাইন। বিশ্রাম নিয়ে কয়েক মিনিট পরীক্ষার পরেও লিখতে পারছিলেন না রিচা। জড়িয়ে যাচ্ছিল কথাও। অবশেষে পরীক্ষা শেষের আগেই কার্যত সাদা খাতা জমা দেন ওই পরীক্ষার্থী। ওই ছাত্রীর মাথা ও মুখ মৌমাছির কামড়ের জেরে ফুলে গিয়েছে। আপাতত হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। রিচার মা পুনম বলেন, “স্কুলের গেটের মুখেই ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছি এসে মেয়ে ও আমাকে কামড়ায়। মাথা, মুখ ফুলিয়ে দিয়েছে। মেয়ে ভুল বকতে শুরু করে। পরে বমি হতে থাকায় হাসপাতালে ভর্তি করে পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু মেয়ের লেখার মতো ক্ষমতা ছিল না। ঘুমে বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল চোখ।” পরীক্ষাকেন্দ্রের ইন-চার্জ রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষা শেষের আগেই মেয়েটি খাতা জমা করেছে। এ ক্ষেত্রে কতটা ভাল পরীক্ষা দিয়েছে সংশয় থাকছেই।” ঘটনাটি নিয়ে ওই পরীক্ষার্থী যে স্কুলের ছাত্রী সেই ছত্তিসগঢ় হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অলোক সিংহ বলেন, “খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের স্কুলের ওই ছাত্রী মৌমাছির হানায় আক্রান্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষা কতটা ভাল দিয়েছে, বলা কঠিন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement