নিজেকে ভোট না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে ফ্লেক্স ঝোলাচ্ছেন বিজেপি নেতা। নিজস্ব চিত্র।
ভোটে জেতার আবেদন জানিয়ে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা এলাকায় এলাকায় দেওয়াল লিখনের পাশাপাশি পোস্টার লাগাচ্ছেন। ফ্লেক্স ঝোলাচ্ছেন। কিন্তু কোলাঘাটের একটি এলাকায় 'আমাকে ভোট দেবেন না' এই আবেদন জানিয়ে ফ্লেক্স দিলেন এক বিজেপি নেতা তথা নির্দল প্রার্থী। নেতার এমন আচরণের পিছনে গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব রয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। যদিও ওই নেতার দাবি, দলকে ভালবেসেই নিজের জন্য ভোট না চাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
কোলাঘাটের পুলশিটা এলাকার মদন কুমার মণ্ডল ২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বিজেপির কোলাঘাট-৪ মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক।তাঁর দাবি, দলের নির্দেশে তিনি কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির ২৩ নম্বর আসনে মনোনয়ন জমা দেন। ওই আসনে বিজেপির আরও দু'জন মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। মদনের দাবি, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে তিনি মনোনয়ন জমা দিলেও তাঁকে প্রতীক দেয়নি দল। প্রতীক দেওয়া হয় বিশ্বজিৎ মণ্ডল নামে একজনকে।মদনের দাবি, তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতেও দল বলেনি। মনোনয়ন প্রত্যাহার না হওয়ায় নির্বাচন কমিশন মদনকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে গণ্য করে 'অটো' প্রতীক দেয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অস্বস্তিতে পড়েন মদন।দলীয় প্রতীক ছাড়া ভোটে লড়তে তিনি রাজি নন। অগত্যা তাঁর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন বুথে ফ্লেক্স ঝুলিয়ে তাঁকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন মদন।
তিনি বলেন, ‘‘আমি নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়তে চাই না। দলের নির্দেশেই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। দল আমাকে বললে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেও নিতাম। আমাকে না জানিয়েই অন্য একজনকে দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়েছে।আমি চাই না আমার জন্য দলের ভোট নষ্ট হোক। তাই এই প্রচার। নিজের জন্য নয়, দলীয় প্রার্থীদের জন্যই প্রচারে নেমেছি।’’
কোলাঘাটের রাজনীতিতে মদন কুমার মণ্ডল বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়কের শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত। দেবব্রত আবার শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী। মদনের পরিবর্তে যাঁকে প্রতীক দেওয়া হয়েছে তিনি বিজেপির কোলাঘাট ব্লক কনভেনর তুষার দোলইয়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তুষার শুভেন্দুর বিপরীত শিবিরের নেতা বলে পরিচিত।দুই গোষ্ঠীর দড়ি টানাটানিতেই এই ঘটনা বলে মত দলের একাংশের। মদন নিজেও বলছেন,"শাসক দলের কোন্দল নিয়ে এতদিন আমরা বলে এসেছি।এখন দেখছি কোন্দল আমাদের দলেও আছে। যাই হোক দলের স্বার্থে নিজের জন্য ভোট চাইব না।"
কোন্দলের তত্ত্ব উড়িয়ে দিয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, "মদনবাবুকে যে সময় মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলা হয় তখন উনি অন্য জায়গায় ছিলেন। সময়মতো আসতে পারেননি। তবে এতে কোনও সমস্যা হবে না। উনি নিজে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে ভোট প্রচারে নেমে পড়েছেন।’’