কলেজে নবীনবরণ, কেশপুরে খরচ ৩ লাখ ৬৬!

কলেজে নবীনবরণ হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে না কি, খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা! বলছেন, খোদ কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া। শুধু বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ নয়। অধ্যক্ষের অভিযোগ, পুরো টাকা মেটানোর জন্য চাপ তৈরি করেছেন কয়েকজন বহিরাগত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪৭
Share:

কেশপুর কলেজ— ফাইল চিত্র।

কলেজে নবীনবরণ হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে না কি, খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা! বলছেন, খোদ কেশপুর কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া। শুধু বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ নয়। অধ্যক্ষের অভিযোগ, পুরো টাকা মেটানোর জন্য চাপ তৈরি করেছেন কয়েকজন বহিরাগত।

Advertisement

গত ১০ অক্টোবর কেশপুর কলেজে নবীনবরণ উৎসব হয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের কয়েকজন প্রাক্তন নেতৃত্বই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘৩ লক্ষ ৬৬ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছে। এটা দেওয়া অসম্ভব।’’ কেন এত খরচ হল? অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা, ওই কলেজের প্রাক্তন টিএমসিপি নেতা (ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকও বটে) শেখ সানাউল্লা বলছেন, ‘‘খরচের বিষয় কলেজ জানে।’’ আরেক উদ্যোক্তা টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সংস্কৃতি সম্পাদক সৌরভ কোলের কথায়, ‘‘কোন খাতে কী খরচ তা কলেজকে জানানো হয়েছে।’’ কলেজ সূত্রের খবর, নবীনবরণের জন্য রিয়্যালিটি শোয়ের যে শিল্পীদের আনা হয়েছিল, সেই খাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মণ্ডপসজ্জায় খরচ ৩৮ হাজার, উপহারের জন্য ২৬ হাজার, ফুল ১৪ হাজার, জলযোগ ৫০ হাজার, দুপুরের খাবারের খরচ ২১ হাজার। সত্যি কি এত খরচ হয়? এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি বলেন, ‘‘তৃণমূলের ছাত্রেরা টাকা লুট করছে। নবীনবরণে দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়।’’

কলেজ সূত্রের খবর, ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকার মধ্যে ইতিমধ্যে ২ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা হলে? অধ্যক্ষের অভিযোগ, শেখ সানাউল্লা-সহ কয়েকজন ছেলে কলেজে এসে অশান্তি করেছে। তাঁর কথায়, ‘‘কোথায় কত টাকা দেওয়া হবে সেটা আমি একা ঠিক করার কেউ নয়। কলেজের পরিচালন সমিতি রয়েছে। সমিতি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। এই সহজ- সরল কথাটাই ওরা বুঝতে চাইছে না।’’ তা হলে অভিযোগ করছেন না কেন? অধ্যক্ষের সাফাই, ‘‘পরিচালন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযোগ জানাব!’’

Advertisement

সানাউল্লা অবশ্য গোলমাল পাকানোর অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘‘কলেজে কোনও অশান্তি হয়নি। নবীনবরণের খরচ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কোনও ঝামেলাও হয়নি!’’ তৃণমূলের অন্দরে প্রাক্তন ছাত্রনেতা সানাউল্লা তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের অনুগামী বলে পরিচিত। কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি বিধায়ক শিউলি সাহা। বিধায়কের সঙ্গে ব্লক সভাপতির সম্পর্ক তেমন ‘মসৃণ’ নয় বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। এই নবীনবরণের জন্য যে কার্ড ছাপানো হয়েছিল তাতেও নাম ছিল না শিউলির। তবে এ ক্ষেত্রে অবশ্য সঞ্জয় কলেজের পাশেই রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলেজ ঠিকই করেছে। যা আলোচনা হওয়ার পরিচালন সমিতির বৈঠকেই হবে।’’ বিধায়কও বলেন, ‘‘কোনও উল্টোপাল্টা খরচ কলেজ দেবে না। ওই অনুষ্ঠানের জন্য যে টাকা দেওয়ার কলেজ দিয়ে দিয়েছে। আর কোনও টাকা দেবে না।’’

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের নৈরাজ্য বরদাস্ত করা হবে না। কেউ যদি মনে করে সংগঠনের নজর তার দিকে নেই তাহলে সে ভুল করছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement