সপরিবার: মনীষা কামিল্যা।
অস্ত্রোপচারের পরে নার্সিংহোম থেকে মাত্র ১৬ দিন আগেই ছোট্ট মেয়ের কাছে ফিরেছিলেন। এর মধ্যেই অঘটন। বাড়িতে সুইচবোর্ড থেকে মোবাইলের চার্জার খুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলেন তিনি।
শুক্রবার রাতে কাঁথি থানার সরিষা গ্রামের ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মনীষা কামিল্যা (২৩) নামে ওই মহিলার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পাঁচেক আগে মনীষাদেবীর বিয়ে হয়েছিল স্থানীয় বাসিন্দা পাপ্পু কামিল্যার সঙ্গে। তাঁর কাজুর ব্যবসা রয়েছে। ওই দম্পতির তিন বছরের এক শিশু কন্যা রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বাড়িতে সুইচবোর্ড থেকে মোবাইলের চার্জার খুলতে গিয়েছিলেন মনীষা। সেই সময় তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। পরিবারের লোকেরা তাঁকে দ্রুত কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকেরা মনীষাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মৃতার স্বামী পাপ্পু কামিলা শনিবার বলেন, ‘‘স্ত্রীর জরায়ুতে টিউমার হয়েছিল। কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার হয়। মাত্র ১৬ দিন আগে সুস্থ হয়ে বাড়ি এসেছিল ও। এর মধ্যে এ কী হয়ে গেল।’’ মনীষার স্বামী জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সময় তাঁদের মেয়ে ময়ূরাক্ষী মাকে ছেডে় বেশ কয়েকদিন ছিল। মনীষা বাড়ি ফিরলে সেই অভিমানে ময়ূরাক্ষী প্রথমে মায়ের সঙ্গে কথাও বলেনি। এখন এই ঘটনায় পাপ্পুর বক্তব্য, ‘‘কয়েক দিন মাকে না পেয়ে ওর এত অভিমান হয়েছিল। এখন পুজোর মুখে ওর মা পুরোপুরি ছেড়ে চলে গেল। এইটুকু মেয়েকে কী বলে বোঝাবো, ভেবে পাচ্ছি না।’’
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার পর কয়েক দিনের মধ্যেই এমন দুর্ঘটনার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না প্রতিবেশীরাও। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, খালি পায়ে মোবাইলের চার্জার খুলতে গিয়ে সম্ভবত সুইচবোর্ডের প্লাগে আঙুল লেগে মনীষা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছেন। কাঁথি থানার পুলিশ এ দিন মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
এক প্রতিবেশী রবীন্দ্রনাথ মান্না বলেন, “মনীষা মিশুকে ছিল। স্মার্ট ফোনের যুগে সামান্য মোবাইল চার্জার খুলতে গিয়ে এমন মৃত্যু, সত্যিই ভাবার বিষয়। এখন সবারই মোবাইল রয়েছে। তাই এই ঘটনা থেকে আমাদেরও সচেতন হতে হবে।’’