আদালত চত্বরে এন্তাজ আলি (সাদা জামা)-সহ অভিযুক্তেরা।
তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যা খুনের মামলায় মেদিনীপুর আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন অভিযুক্ত কেশপুরের সিপিএম নেতা এন্তাজ আলি-সহ ১৪ জন নেতা-কর্মী। তারা জামিনের আবেদনও জানিয়েছিলেন। যদিও আদালত তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে মেদিনীপুর সিজেএম আদালত। সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব বলেন, “১৪জনকেই জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়েছে।”
দলের এক সূত্রে খবর, সিপিএম নেতৃত্ব এই মামলায় অভিযুক্তদের আত্মসমর্পণ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ঘটনায় মোট ২৬ জনের নামে মামলা রুজু হয়েছিল। ইতিমধ্যেই ২ জন গ্রেফতার হয়ে এখন জামিনে মুক্ত। বাকি অভিযুক্তরাও কি আত্মসমর্পণ করবেন? সিপিএমের কেশপুর জোনাল সম্পাদক মানিক সেনগুপ্তের জবাব, “নিশ্চয়ই করবেন। তবে এখনও কিছু ঠিক হয়নি।”
ঘটনাটি ২০১৪ সালের ২২ অক্টোবরের। ওই দিন রাতে কেশপুরের আনন্দপুর থানার জগন্নাথপুরে খুন হন জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা কাকলি বরদোলুই। অভিযোগ, স্বামী বিশ্বজিৎ বরদোলুইয়ের সামনেই গুলি করে খুন করা হয় বছর আঠাশের ওই গৃহবধূকে। বিশ্বজিৎবাবু কেশপুরের জগন্নাথপুর অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। ঘটনার পরেই অজ্ঞান হয়ে যান বিশ্বজিৎবাবু।
কাকলিদেবীর পিঠে গুলি লাগে। ঘটনায় বিশ্বজিৎবাবুর দাদা হরেন বরদোলুই আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষেরও। এর আগে দাসেরবাঁধ কঙ্কাল মামলায় নাম জড়ায় সুশান্তবাবুর। সিআইডি-র হাতে গ্রেফতার হন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জামিনে মুক্ত হন।
সিপিএমের দাবি, পুরো অভিযোগটাই সাজানো। তৃণমূল নেতৃত্ব যা বলে দিয়েছিলেন, তাই অভিযোগপত্রে লেখা হয়। সিপিএমের আরও দাবি, অভিযোগপত্রের লেখাটি হরেনবাবুর নিজের হাতের লেখা নয়। তাঁর সামনে অন্য একজন লিখেছেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, “সিপিএমের লোকেরাই কাকলি বরদোলুইকে খুন করেছে।” তাঁর মন্তব্য, “ওদের ১৪ জন আত্মসমর্পণ করে জেলে গেল। অনেক দেরিতে হলেও ওদের বোধদয় হয়েছে! আশা করি, সুশান্ত ঘোষেরও বোধদয় হবে! এই মামলায় অভিযুক্ত বাকিরাও আত্মসমর্পণ করবে। আইন আইনের পথেই চলবে।” ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।