এই তোরণ সংস্কার নিয়েই অভিযোগ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র
মাত্র ছ’বছর আগে তৈরি দিঘার প্রবেশ দ্বার ‘দিঘা ওয়েলকাম গেট’ সংস্কার করতে খরচ হচ্ছে দেড় কোট টাকা। আর তাতেই সৈকত শহর দিঘায় সৌন্দর্যায়নের নামে শাসকদলের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ তুলল বিজেপি।
প্রথমে বুলবুল। তারপর আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ‘দিঘা ওয়েলকাম গেট’। সৈকত শহরে ঢোকার মুখে সেই তোরণ সংস্কার শুরু করেছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। এর জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।
উল্লেখ্য, দিঘায় ঢোকার মুখে ১১৬ বি জাতীয় সড়কের উপরে তৈরি তোরণটি। মোটা বিমের উপরে লোহার খাঁচা দিয়ে তৈরি গেট। তার উপরে চাপানো হয়েছিল এসআরপি বোর্ড। এর জন্য ৬ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল রাজ্য সরকার। ২০১৪ সালের ২৫ নভেম্বর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে ওই সুদৃশ্য তোরণের দুদিকে নানা রকমের ফুলের গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু সে সব গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে বুলবুল ঝড়ে তোরণটি প্রথম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপরের দিকের এসআরপি বোর্ড উড়ে গিয়েছিল। প্রায় আচ্ছাদন হীন অবস্থায় কয়েক মাস ধরে পড়েছিল তোরণটি। সেই অবস্থায় উপর দিয়ে জল ঢুকে তোরণের বেশকিছু লোহা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমপানে তোরণটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে পর্ষদ সূত্রে খবর। তোরণটি সংস্কারের জন্য রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর অর্থ বরাদ্দ করার পর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
করোণা পরিস্থিতিতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে তোরণ সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি (কাঁথি) তপন মাইতি বলেন, ‘‘দিঘায় উন্নয়নের নামে টাকা চুরি চলছে। তোরণের চারদিকে ফুলের গাছ বসিয়ে সৌন্দর্যায়নের নাম করে সব টাকা চুরি করা হয়েছে। এখন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা খাতে সরকার ঠিকমত অর্থ বরাদ্দ করতে পারছে না। অথচ দিঘায় তোরণ সংস্কারে দেড় কোটি টাকা খরচ করছে।’’ ইতিমধ্যে এই তোরণ সংস্কার এবং তার সৌন্দর্যায়নে সরকারি অর্থ নয়ছয় করা হচ্ছে বলে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি।
স্থানীয় বিধায়ক ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অখিল গিরি বলেন, ‘‘প্রাথমিকভাবে ওই তোরণ সংস্কারে কম টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু তোরণ যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সমীক্ষা করে দেখার পর পরবর্তী পর্যায়ে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ করে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।’’ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় এ ধরনের সৌন্দর্যায়ন বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেই দাবি বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়ারদের। তার জন্য ওই তোরণ টিকিয়ে রাখা যথেষ্ট ব্যয় সাপেক্ষ বলে মনে করেন তাঁরা।