বৈঠক চলছে। নিজস্ব চিত্র।
বাংলাদেশে জঙ্গি হানার জেরে রাজ্যের সীমান্ত এলাকাগুলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনের জায়াগাগুলিতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুদৃঢ় করতে চাইছে রাজ্য পুলিশ।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর সন্ত্রাস মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়া বীরভূমে আরও সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। তারই প্রাথমিক ব্যবস্থা হিসেবে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের থাকার জায়গা, হোটেল ও লজগুলির উপর গুরুত্ব দিয়েছে তারা। মঙ্গলবার শান্তিনিকেতন এবং বোলপুর এলাকার হোটেল ও লজ মালিকদের নিয়ে প্রাথমিক বৈঠকও সারলেন তারা। সন্দেহভাজন নাম ঠিকানা-সহ তাঁদের গতিবিধির ওপর নজরদারি নিয়ে বৈঠকে তাঁরা কথা বলেন হোটল-লজ মালিকদের সঙ্গে।
বোলপুর-শান্তিনিকেতন হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের নিয়ে বোলপুরের একটি বেসরকারি হোটেলে বৈঠক করে মহকুমা পুলিশ।
ছিলেন বোলপুরের এসডিপিও অম্লান কুসুম ঘোষ, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুশোভন মণ্ডল, বোলপুর এবং শান্তিনিকেতন দুই থানার সংশ্লিষ্ট অফিসাররা এবং ওই সংগঠনের সদস্যেরা। মহকুমা পুলিশ ও লজ মালিকদের ওই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন থেকে লজে আসা প্রত্যেক আবাসিকদের নাম, ঠিকানা এবং পরিচয় পত্র যাচাই করা হবে। এবং তার জেরক্স কপি সঙ্গে রাখার জন্য বলা হয়েছে। ওই আলোচনায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সিসিটিভিতে যেন পর্যটকদের ছবি রেকর্ড থাকে। সন্দেহভাজনদের সম্পর্কে উপযুক্ত তথ্য দিয়ে সহায়তা করার আর্জি জানিয়েছে পুলিশ। এবং নাম, ঠিকানা এবং পরিচয় অনলাইন ব্যবস্থা করে পুলিশের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা নিয়েও এ দিন প্রাথমিক স্তরে আলোচনা হয়েছে।
বোলপুর-শান্তিনিকেতন হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রসেনজিৎ চৌধুরী বলেন, “পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশে জঙ্গি হানার ঘটনার জেরে বোর্ডারদের রাখা নিয়ে নানা রকমের সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিতে আলোচনা হয়েছে। আবাসিকদের নাম পরিচয় পত্র, সিসিটিভি ফুটেজ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশের নির্দেশ মানার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য জানিয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন অফিসারের দাবি, শান্তিনিকেতন এবং বোলপুর এলাকায় বহু দেশি বিদেশী পর্যটক আসেন। কে কি মতলব নিয়ে আসছে কারও জানার সাধ্য নেই। কিন্তু ওই সমস্ত জায়গাগুলিতে তাঁদের সঠিক পরিচয় নথিভুক্ত থাকলে সুবিধা হয়। কিন্তু ইদানীং কালে দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু হোটেল এবং লজে ওই নিয়ম মানা হচ্ছে না। সমস্ত জায়গায় নেই সিসিটিভি-র ব্যবস্থাও। পাশাপাশি বিদেশি নাগরিকদের জন্য থাকা সুনির্দিষ্ট ফর্মও অনেকে পূরণ করেন না বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই সমস্ত বিষয় যাতে স্বাভাবিক থাকে তার জন্য জেলা পুলিশ স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে। জেলা পুলিশ সঙ্গে বৈঠকের পর সংগঠনের সভাপতি অজয় ঘোষ এবং সম্পাদক প্রসেনজিৎ চৌধুরী ইতিমধ্যেই লজ এবং হোটেলগুলিতে বার্তা পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার থেকে লাভপুর এলাকার বাসিন্দাকে জঙ্গি সন্দেহে বর্ধমান স্টেশন আটক করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর আরও নড়েচড়ে বসেছে জেলা পুলিশ। এক কর্তার কথায়, খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে যুক্তদের অনেকের বীরভূম ঠিকানা এবং লাভপুরের যুবকের গ্রেফতার মনে রেখেই এই সতর্কতা জেলা পুলিশের। এসডিপিও বলেন, ‘‘এ দিন হোটেল ও লজ মালিকদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে।’’