মন্ত্রী গৌতমের কাছে আজ মেয়র অশোক

অতীতে শহরের স্বার্থে দুজনকে একযোগে মিছিলে হাঁটতে দেখেছে শিলিগুড়ি। এক জনের ডাকে আর এক জনকে সম্প্রীতি বিষয়ক সর্বদল বৈঠকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। মারণ জ্বর সার্সের প্রকোপের সময়েও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দুজনেই শহরের সুস্থতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সব ঠিকঠাক থাকলে প্রায় ৮ বছর বাদে, আজ, সোমবার দুপুরে ফের সেই যুযুধান দুই নেতাকে মুখোমুখি দেখবে শিলিগুড়ি। এক জন হলেন অশোক ভট্টাচার্য। অন্য জন গৌতম দেব। ভোট-রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ও বোর্ড গড়া নিয়ে সাম্প্রতিক তিক্ততা ভুলে ফের দু’জনে শহরের উন্নয়নে সুর মেলাবেন কি না— তা নিয়ে জোর চর্চা এখন শিলিগুড়িতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৫ ০৪:২২
Share:

অতীতে শহরের স্বার্থে দুজনকে একযোগে মিছিলে হাঁটতে দেখেছে শিলিগুড়ি। এক জনের ডাকে আর এক জনকে সম্প্রীতি বিষয়ক সর্বদল বৈঠকে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। মারণ জ্বর সার্সের প্রকোপের সময়েও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দুজনেই শহরের সুস্থতাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। সব ঠিকঠাক থাকলে প্রায় ৮ বছর বাদে, আজ, সোমবার দুপুরে ফের সেই যুযুধান দুই নেতাকে মুখোমুখি দেখবে শিলিগুড়ি। এক জন হলেন অশোক ভট্টাচার্য। অন্য জন গৌতম দেব। ভোট-রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ও বোর্ড গড়া নিয়ে সাম্প্রতিক তিক্ততা ভুলে ফের দু’জনে শহরের উন্নয়নে সুর মেলাবেন কি না— তা নিয়ে জোর চর্চা এখন শিলিগুড়িতে।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, আজ, বেলা ১২টায় শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’য় অশোকবাবুর সঙ্গে গৌতমবাবুর বৈঠক হওয়ার কথা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উত্তরকন্যায় শিলিগুড়ির মেয়রকে দেখা করার জন্য সময় দিয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু যাবেন পুর কমিশনার- সহ ৩ জন অফিসারকে নিয়ে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর নিজের দফতরের অফিসার, ইঞ্জিনিয়র ও শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকেরও থাকার কথা।

অশোকবাবু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি শিলিগুড়ি শহরের বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ব্যাপারে সাহায্য চাইবেন। তিনি জানান, যেখানে এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সহযোগিতাও দরকার শিলিগুড়ি পুরসভার। সে কথা আগাম জানানোয় প্রস্তুতিতে ফাঁক রাখতে চাইছেন না গৌতমবাবুও।

Advertisement

তবে বৈঠক হলেও শিলিগুড়ির স্বার্থে দু’জনে একজোট হয়ে হাঁটবেন, এমনটা ভাবতে পারছেন না ভুক্তভোগীদের অনেকেই। কারণ, মেয়র হওয়ার পরে অশোকবাবু কলকাতায় গিয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দেখা পাননি। পুরমন্ত্রীর অফিসে গিয়ে তাঁর সচিবের সঙ্গে দেখা করার জন্যও অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রাক্তন পুরমন্ত্রীকে। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে আলোড়ন তৈরি হয়। মমতা সরকারের মন্ত্রীদের সৌজন্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে।

কলকাতায় গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরেও তাঁকে ফের বসে থেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতে হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন খোদ মেয়রই। প্রথম বার চিঠি দিয়ে দেখা করার আর্জি জানানোর পর মন্ত্রীর দফতর থেকে এক দিন পরেই চিঠি পাঠিয়ে ৮ জুন দেখা করার সময় জানানো হয়েছিল। কিন্তু কলকাতা থেকে ফিরে আসার পর তাতেও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না। ফের মন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়ে দেখা করার আর্জি জানান। এ বারও চিঠি পাঠিয়ে তাকে একই ভাবে ওই দিন দেখা করার কথা জানানো হয়। অন্তত, গৌতম দেবের দফতরের তরফে রবিবার রাতে তেমনই বার্তা পাঠানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমের কাছে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী নিজেও বলেন, ‘‘মেয়র দু’বার চিঠি দিয়েছেন। তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কবে দেখা হবে। তিনি তা নিয়ে নানা বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে বৈঠকের আগে এ ব্যাপারে বিশেষ কিছু বলতে চাই না।’’

মেয়র বলেন, ‘‘নতুন করে কোনও আর্থিক সহায়তা চাইতে যাচ্ছি না। পুরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে এসজেডিএ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে যে সমস্ত কাজে আর্থিক সাহায্যের কথা জানানো হয়েছিল, সেই সব প্রকল্পের অর্থ চাইব।’’ পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, ১০ নম্বর জোতে পানীয় জল প্রকল্পে জলাধার তৈরির জন্য এসজেডিএ আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছিল। সেই কাজে এসজেডিএ’র কাছ থেকে ২ কোটি টাকা পাবে পুরসভা। তেমনই মন্ত্রী যে এলাকার বাসিন্দা, সেই ১৭ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা, নিকাশি প্রকল্পের কাজেও এসজেডিএ এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে আর্থিক সাহায্যের কথা জানানো হয়েছিল। সেই মতো কোনও ক্ষেত্রে কাজ হয়ে গিয়েছে, কোনও ক্ষেত্রে টেন্ডার ডেকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়েছে। সেই সব খাতে পাওনা টাকা দেওয়ার আর্জি জানাবেন মেয়র।

বৈঠকে আধিকারিকরা থাকার কথা থাকলেও পুরসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা কাউন্সিলর নান্টু পাল বৈঠকে ডাক পাননি। তিনি বলেন, ‘‘মন্ত্রী বা মেয়র কোনও তরফে আমন্ত্রণ পাইনি। তাই বৈঠকে থাকার প্রশ্ন নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement