শনিবার দলের সভায় যাঁরা ট্রেনে এসেছেন, তাঁরা সবাই যে টিকিট কেটে আসেননি—তা কার্যত মেনে নিয়েছে বিজেপি। তবে শুধু বিজেপিই নয়। সভা-সমাবেশ অভ্যস্ত এ রাজ্যের কোনও দলই এই ব্যবস্থার বাইরে নয়। প্রকাশ্যে অন্যরকম বললেও এই ব্যবস্থা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করে না কেউ। কারণ দল ও মত নির্বিশেষে মাঠ ভরানোয় নজর থাকে সকলের।
দলের যুব সংগঠনের সমাবেশ দেখে উৎফুল্ল বিজেপির সর্বভারতীয় নেতারা। এ দিন মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে বারবার তা জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এই ভিড়ের একটা অংশ ট্রেনে এলেও তাঁদের টিকিট ছিল কি? রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর কথায়, ‘‘বিনা টিকিটে এই যাতায়াত এখানকার রাজনৈতিক সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের সভায় যে তা হয়নি, এ কথা বলতে পারব না।’’
তৃণমূলের সভা সম্পর্কে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমরা কখনই এটা উৎসাহ দিই না। সমর্থকেরা অধিকাংশই টিকিট কেটে আসেন। প্রয়োজন হলে বগি ভাড়া নিই।’’ তবে একেবারেই যে বিনাটিকিটে কেউ আসেন না, সে দাবি তিনিও করেননি। সিপিএমের সভা-সমাবেশে আসতে সমর্থকেরা কি ট্রেনে টিকিট কেটে যাতায়াত করেন? দলের নেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘সে দাবি করব না। তবে আমরা বহু সময় ট্রেন ভাড়া করেছি। আবার কখনও এক-একটি স্টেশন থেকে আমরা একসঙ্গে প্রচুর টিকিটও কেটেছি।’’
শনিবারের সভায় উত্তরবঙ্গ থেকে আসা সমর্থকদের জন্য আলাদা করে ‘কোচ’ ভাড়া নিয়েছিল বিজেপি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেন এ দিন হাওড়া থেকে ১০ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী টিকিট কেটে যাতায়াত করেছেন। সপ্তাহের অনান্য দিনের তুলনায় ওই সংখ্যা খুব বেশি নয়। মেট্রোয় যাতায়াত ছিল স্বাভাবিকের থেকে একটু বেশি।
২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশের তুলনায় শনিবার বিজেপির সমাবেশের দিনে রেল এবং মেট্রোয় ভিড় কম ছিল বলে রেল সূত্রে খবর। মেট্রো জানিয়েছে, তৃণমূলের শহিদ দিবসে সারা দিনে মেট্রোতে যাত্রী সংখ্যা ছিল ৬ লক্ষ ৬০ হাজারের মতো। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত মেট্রোয় ৫ লক্ষের কাছাকাছি যাত্রী যাতায়াত করছেন বলে খবর। চূড়ান্ত হিসেবে ওই সংখ্যা খানিকটা বাড়তে পারে। প্রসঙ্গত, ২১ জুলাই শুধু শিয়ালদহ থেকে টিকিট কেটে যাত্রা করেছিলেন এমন যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৯০ হাজারের কাছাকাছি। হাওড়া থেকে ওই দিন টিকিট বিক্রির নিরিখে যাত্রী সংখ্যা ছিল ২ লাখের কাছকাছি। যাতায়াত ছিল অনেক বেশি।