মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে নাম জড়াল মাওবাদীদের।
বুধবার বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী ও ঝাড়খণ্ড থেকে কিছু কিছু মাওবাদী এসে এখানে বসে বসে নানা রকম বদমায়েশি করে।’’ সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে কি না, তা পুলিশকর্তাদের কাছে জানতেও চান। বীরভূমের পুলিশ সুপার নীলকান্তম সুধীরকুমার তাঁকে জানান, ঝাড়খণ্ডের তিনটি জেলা বীরভূম লাগোয়া। সীমানা প্রায় ১০০ কিলোমিটার। সেখানে থাকা ১০টি থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নজরদারিও চলছে।
২০০৭ সালে অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় খয়রাশোলেরর পাঁচড়া ও ভীমগড় স্টেশনের মাঝে রেললাইন উড়িয়ে দিয়েছিল মাওবাদীরা। মাওবাদী পোস্টারও উদ্ধার হয়েছিল। কয়েক বছর আগেও রাজনগর, মহম্মদবাজার, কাঁকরতলা, সদাইপুর, মুরারইয়ে বিভিন্ন ঘটনায় মাওবাদীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছিল পুলিশ। জেলা সিপিএমের দু-তিন জন নেতা-কর্মী খুনেও তাদের নাম জড়ায়। বর্তমানে অবশ্য মাওবাদী কার্যকলাপ জেলায় নেই বলেই পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি।
তাই ওই প্রসঙ্গে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বভারতীর নাম নেওয়ায় জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশ্বভারতীর ছাত্রনেতা অচিন্ত্য বাগদি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে এই বিষয়টির উপর নজর দিয়েছেন বা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এটাই অনেক। সমস্যা সত্যিই রয়েছে। সে জন্যই বারবার বিশ্বভারতীর নাম শিরোনামে উঠে আসছে।’’ নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন পিডিএসএফের সদস্য শুভ্রনীল দত্তের কথায়, ‘‘রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান কোনও বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেই পারেন। তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে এর চেয়েও বড় সমস্যা রয়েছে বিশ্বভারতীতে। সাম্প্রতিক কিছু অশান্তি থেকেই বিষয়টি সামনে এসেছে। সেগুলি নিয়েও উনি ভাবলে বিশ্বভারতীর পক্ষে ভাল হত।’’
কিছু দিন আগে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য শ্যামবাটি ক্যানালে একটি পুরনো গাছ কাটার সময় বাধা দেন বিশ্বভারতীর কয়েক জন পড়ুয়া। মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের মন্তব্যের পিছনে সেই ঘটনা থাকতে পারে বলেও অনুমান পড়ুয়াদের একাংশের।
বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের দাবি, মাওবাদী কাজকর্মে সঙ্গে যুক্ত কোনও পড়ুয়া এখানে নেই। তবে কিছু নকশালপন্থী রয়েছেন। সে জন্য বিশ্বভারতীর নাম উঠে আসার কোনও মানে হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।