SSC recruitment Case Verdict

‘মৃত্যুদণ্ডের সমান’! বলছেন অনেকে, চাকরি বাতিলে অথৈ জলে বহু ‘শিক্ষক’, প্রশ্ন: কেন আলাদা হল না যোগ্য-অযোগ্য?

২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে নাম থাকা অনেকের বক্তব্য, ‘‘এই রায় মৃত্যুদণ্ডের সমান।’’ নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করে তাঁদের প্রশ্ন, এত নথি জমা পড়ার পরেও কেন যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা গেল না?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩৫
Share:

চাকরি বাতিলে অথৈ জলে বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। ফাইল ছবি।

২০১৬ সালের এসএসসি-তে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে এক ধাক্কায় ২৬ হাজার (আদতে ২৫,৭৫২) জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অথৈ জলে পড়েছেন ওই প্যানেলে নাম থাকা বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের কারও বক্তব্য, ‘‘এই রায় মৃত্যুদণ্ডের সমান।’’ নিজেদের যোগ্য বলে দাবি করে অনেকের প্রশ্ন, এত নথি জমা পড়ার পরেও কেন যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা গেল না?

Advertisement

দক্ষিণেশ্বরের ভারতী ভবন গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষিকা অদিতি বসু বলেন, ‘‘আমরা এত দিন ধরে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে এসেছি। সকাল ১০টা ৪৫-এ জানতে পারলাম, আমরা ভুল। এটা আমার কাছে মৃত্যুদণ্ডের সমান। শুধু আমার সঙ্গে নয়, আমার মতো হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে অন্যায় হল আজকের এই রায়ে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।’’

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এমন রায় ঘোষণা হবে, কল্পনা করতে পারছেন না ২০১৬ সালের প্যানেলে নাম থাকা রিজিয়া খাতুন। তিনি ভৌতবিজ্ঞানের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘এক জন মানুষ ক’বার পরীক্ষা দেবে? আমরা যে আবার পাশ করব, তার কী নিশ্চয়তা রয়েছে? আমাদের জীবন অন্ধকারে চলে গেল।’’ প্রতাপ রায়চৌধুরী নামে আর এক শিক্ষকের প্রশ্ন, ‘‘ওই প্যানেলের কে বৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছে, আর কে অবৈধ ভাবে, তার তালিকা তো সিবিআই, এসএসসি সকলেই দিয়েছিল। তার পরেও কেন যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করা গেল না?’’ সুপ্রিম কোর্ট কি টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছে? প্রতাপের জবাব, ‘‘টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেনি। যারা সাদা খাতা জমা দিয়েছিল, তাদের টাকা ফেরত দিতে বলেছে বলে শুনলাম। কিন্তু আমরা যোগ্যরা এখন কী করব, কোথায় যাব?’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা ২৬ হাজার জনের চাকরি বৃহস্পতিবার বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে, যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব হয়নি। ২০১৬ সালের এসএসসি পেয়ে যাঁরা চাকরি করছিলেন, তাঁরা নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। নির্দেশ, নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। যাঁরা অন্য সরকারি চাকরি ছেড়ে ২০১৬ সালের এসএসসির মাধ্যমে স্কুলের চাকরিতে যোগদান করেছিলেন, তাঁরা চাইলে পুরনো কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারবেন।

ভ্রম সংশোধন: এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময়ে লেখা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছে আদালত। কিন্তু এই তিন মাসের সময়সীমা সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আদালতের রায়ের প্রতিলিপিতে লেখা হয়েছে, চাকরিহারা যে প্রার্থীরা আগে কোনও সরকারি দফতরে বা সরকার পোষিত দফতরে চাকরি করতেন, তিন মাসের মধ‍্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরকে তাঁদের চাকরি ফেরত দিতে হবে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement