স্কুলের হালহকিকত খতিয়ে দেখতে খোদ স্কুলশিক্ষা সচিবকেও পরিদর্শনে যেতে হয়েছিল। স্কুল পরিদর্শনের জন্য বিকাশ ভবনের কর্তাদেরও পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। কিন্তু আদতে যে-সব অফিসারের উপরে স্কুল পরিদর্শনের মতো গুরুদায়িত্ব রয়েছে, তাঁদের বহু পদই শূন্য। ফলে পরিদর্শনে ঘাটতি পড়ছে বলে শিক্ষা শিবিরের অভিযোগ। তবে স্কুলশিক্ষা দফতরের দাবি, আগের থেকে কর্মী-সমস্যা অনেকটা মিটেছে। আরও বেশ কিছু পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।
বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, বাম আমলে ‘অ্যাকাডেমিক ডিআই’ নামে একটি পদ তৈরি করা হয়েছিল। ওই পদাধিকারীরা জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-এর সঙ্গে কাজ করবেন, তবে তাঁদের মূল দায়িত্ব হবে পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি ও পরামর্শ দেওয়া। জেলায় শিক্ষা দফতরের মাথায় থাকেন ডিআই। পঠনপাঠন থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রশাসনিক কাজ চলে তাঁর তত্ত্বাবধানে। সেই চাপে পঠনপাঠনের দিকটি যাতে চাপা না-পড়ে, সেই জন্যই ওই পদ তৈরি করা হয়েছিল বলে দাবি বিকাশ ভবনের কর্তাদের। কিন্তু অনুমোদিত অ্যাকাডেমিক ডিআই ১৮টি পদের মধ্যে ১৩টিতে এখন কোনও অফিসারই নেই। ফলে পরিদর্শন হলেও পঠনপাঠনের উপরে আলাদা গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি যে থাকছে, সেটা মানছেন অনেকেই। সরকারি সুযোগ-সুবিধা পড়ুয়াদের কাছে যথাযথ ভাবে পৌঁছয় কি না, সেই রিপোর্ট পাওয়া যায় পরিদর্শনের ভিতিততেই। কিন্তু খাতায়-কলমে বহু নির্দেশ দেওয়া থাকলেও আদতে সেই কাজ করতে গিয়ে যে হোঁচট খেতে হচ্ছে, তা মানছেন ডিআই-রাও।
একই ভাবে সহকারী স্কুল পরিদর্শক এবং অবর স্কুল পরিদর্শক (এসআই)-এর বহু পদ ফাঁকা। পরিদর্শন যথাযথ করতে হলে ওই সব পদে নিয়োগ প্রয়োজন বলে দাবি তুলছেন শিক্ষকেরা। বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, এসআই নিয়োগের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। সাড়ে তিনশোর বেশি পদে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। বাকি পদগুলিও পূরণের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে। কয়েক বছর আগে বহু কর্মী-পদই ফাঁকা ছিল। সেই তুলনায় এ বার পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির স্বপন মণ্ডল ও স্কুল পরিদর্শক সমিতির নেতা কালীপদ সানার বক্তব্য, স্কুলশিক্ষায় পরিদর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই কাজ যথাযথ ভাবে করতে হলে কর্মী দরকার। কর্মী-ঘাটতি থাকলে পরিদর্শন ঠিক ভাবে হয় না। তাঁদের দাবি, অ্যাকাডেমিক ডিআই-দের শূন্য পদে যাতে দ্রুত নিয়োগ হয়, সেই বিষয়ে সরকার সদর্থক পদক্ষেপ করুক।