ফাইল চিত্র
আকাশ ঢাকা ঘন কালো মেঘে। মাঝারি থেকে ভারী ধারাপাত দিনভর। আষাঢ়স্য বর্ষায় বিপর্যস্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জনজীবন। জলাধারের ছাড়া জলে বিভিন্ন নদীতে জল বাড়তেও শুরু করেছে। সতর্ক থাকছে রাজ্য প্রশাসন।
প্রবল বর্ষণে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির রামচকে মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধ দম্পতির। আসানসোলের রেলপাড়ের বছর বাইশের যুবক মহম্মদ ইফতেকার আলম নামে এক যুবক গাড়ুইয়ের জলে তলিয়ে যান শুক্রবার। শনিবার তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবারই বীরভূমের খয়রাশোলের বাবুইজোড়ে গরু নিয়ে হিংলো নদী পার করতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছিলেন রামচন্দ্র গড়াই (৬৮)। এ দিন তাঁরও দেহ মিলেছে। এ দিনই লাভপুরের সুবলপুর ঘাটের কাছে বক্রেশ্বর নদে তলিয়ে যাওয়া কজওয়ে পেরনোর সময় ভেসে যান এক যুবক।
বাঁকুড়ায় বৃষ্টিপাত কমায় দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তরও কমলেও ওই নদের জলে প্লাবিত হুগলির আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে জল নামার লক্ষণ নেই। সেচ দফতরের চিন্তা বাড়িয়েছে ডিভিসি-র ছাড়া জলে এ দিন দামোদরের জলস্তর প্রাথমিক বিপদসীমা (১৬.৬১ মিটার) ছাড়িয়ে যাওয়া। জল বেড়েছে দামোদরের শাখা মুণ্ডেশ্বরী নদীতেও। প্লাবিত গ্রামগুলিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। শিলাবতীর জল প্রাথমিক বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ঘাটাল ব্লকের লক্ষাধিক বাসিন্দা পুরোপুরি জলবন্দি। জল বেড়েছে ঘাটাল শহরের ১২টি ওয়ার্ডেও। টানা বৃষ্টিতে আসানসোল পুর-এলাকার প্রায় পাঁচশোটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলমগ্ন দুই ২৪ পরগনার বহু এলাকাও। বসিরহাট, ক্যানিং, ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপ মহকুমার বিভিন্ন এলাকা জলবন্দি। ইয়াসে বাঁধ ভেঙে জলে ভাসা বহু এলাকা বৃষ্টিতে নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।
শনিবার দুপুর ২টো পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের মাইথন থেকে ৮,৫০০ কিউসেক হারে এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ১৪ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। এ ছাড়া, দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫০ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। তবে, এখনই চিন্তার কিছু নেই বলে ডিভিসি-র আধিকারিকদের মত। মুর্শিদাবাদে শনিবার সকাল ৬টায় ভাগীরথীর জলস্তর ছিল ১৮.২ মিটার। বিপদসীমা ২০.২৭ মিটার। পূর্ব বর্ধমানে ভাগীরথী, অজয় ও দামোদরে জল বাড়লেও শনিবার পর্যন্ত জলস্তর বিপদসীমার অনেক নীচে রয়েছে। তবে, দুর্গাপুর
ব্যারাজে জল ছাড়ার জেরে আউশগ্রামে কুনুর নদী উপচে কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। বাঁকুড়া জেলায় দ্বারকেশ্বর নদে জল বাড়ায় কোতুলপুর, ওন্দা, ইন্দাস প্রভৃতি ব্লকে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।