WB Panchayat Election 2023

ভোটের ময়দানে চাকরিপ্রার্থীরাও

টেট পাশ করেও ২০২০ সালের মেধা তালিকায় ঠাঁই পাননি মালদহের সইফ আহমেদ জিশান। তাই চাকরি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এ বারের ভোটে মালদহের বৈরগাছি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাম প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৩ ০৭:০১
Share:

—প্রতীকী ছবি।

কেউ বামের প্রার্থী, কেউ বা কংগ্রেসের। কেউ আবার একেবারেই ‘নির্দল’। তবে এই প্রার্থীদের অন্য একটি পরিচয়ও আছে। তাঁরা স্কুলে নিয়োগের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী। সেই সূত্রেই হয় তো কোথাও এক তারে বাঁধা পড়েছেন তাঁরা। এই প্রার্থীদের দেখে অনেকে অবশ্য বলছেন, লড়াই শব্দটি এঁদের কাছে ‘অপরিচিত’ নয়। কারণ, নিয়োগের দাবিতে মাঠ-ময়দানের লড়াইয়ে এত দিন ধরে ছিলেন তাঁরা। এ বার লড়াইয়ের ময়দান বদলে গিয়েছে। সেই সূত্রেই চাকরিপ্রার্থীর বদলে ভোটপ্রার্থী পরিচয় জুটেছে।

Advertisement

টেট পাশ করেও ২০২০ সালের মেধা তালিকায় ঠাঁই পাননি মালদহের সইফ আহমেদ জিশান। তাই চাকরি আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এ বারের ভোটে মালদহের বৈরগাছি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাম প্রার্থী হয়েছেন তিনি। নিজে বেকারের যন্ত্রণা বুঝছেন। তাই ভোট প্রচারে সেই সমস্যাই তুলে ধরছেন তিনি। জিশান বলছেন, ‘‘রাজ্যে বেকারত্ব, দুর্নীতির প্রতিবাদ জরুরি। বামেরা জিতলে এই সমস্যার সমাধান হতে হবে।’’ নিয়োগের পাশাপাশি ১০০ দিনের কাজে, আবাস প্রকল্পের দুর্নীতির কথাও তুলছেন তিনি। এ-ও বলছেন, চাকরি পেলেও রাজনীতি থেকে ‘দূরে’ থাকবেন না।

দক্ষিণ দিনাজপুরে কুশমণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম প্রার্থী হয়েছেন জয়ন্ত রায়ও। তিনিও স্কুল নিয়োগের বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী। তবে ভোটে দাঁড়াবেন কি না তা নিয়ে গোড়ায় ‘দ্বিধায়’ ছিলেন জয়ন্ত। তবে এখন বলছেন, ‘‘শেষে ঠিক করলাম, চাকরির দাবিতে কলকাতার রাস্তায় যেমন লড়াই করেছি, গ্রামেও সেই লড়াই পৌঁছে দেব। তাই রাজনীতির ময়দানে নামলাম। আসলে গ্রাম-গঞ্জে প্রায় প্রতি বাড়িতেই যোগ্য চাকরিপ্রার্থী আছেন।’’ বামের বাইরে কংগ্রেস শিবিরেও চাকরিপ্রার্থীরা আছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে এ বার ‘হাত’ চিহ্নে দাঁড়িয়েছেন শুভঙ্কর মণ্ডল।

Advertisement

তবে এই শাসক-বিরোধী তরজার বাইরে ‘তৃতীয়’ পক্ষ হিসাবে থাকতে চান উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদের চাকরিপ্রার্থী তাহিদুল ইসলাম। দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর পঞ্চায়েত সমিতি ভোটে নির্দল প্রার্থী তাহিদুল বলছেন, “শাসক বা বিরোধী, কারও ভূমিকায় আমরা খুশি নই। শাসক দল যেমন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে রেখেছে বছরের পর বছর সেরকমই বিরোধী পক্ষের ভূমিকাও ঠিক নয়। তারাও আমাদের ব্যবহার করেছে। এখন বিরোধীপক্ষদেরও সেই ভাবে আমাদের আন্দোলন মঞ্চে দেখতে পাওয়া যায় না। তাই আমি নির্দল প্রার্থী হয়ে মোটর ভ্যান চিহ্নে দাঁড়িয়েছি।” ভোট ময়দানে এই প্রার্থীদের উপস্থিতি দেখে অনেকে অবশ্য় বলছেন, মহানগরের রাজপথে চাকরিপ্রার্থীদের লড়াই সমাজের নানা মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে। ভোটের বাজারে তাঁরা আলোড়ন তৈরি করতে পারবে কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement