নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অব্যবহৃত অর্থের দ্রুত ব্যবহারে দৈনিক খরচের লক্ষ্যমাত্রা লোকসভা ভোটের অনেক আগেই প্রতিটি জেলাকে বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু ভোটের পরে তথ্যে দেখা যাচ্ছে, তার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি জেলাগুলির খরচ। প্রসঙ্গত, ভোটের দীর্ঘ সময় ধরে সব কাজ কেন বন্ধ হয়ে যায়, বিগত কয়েকটি প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। কেন্দ্রের বরাদ্দ নিয়ে রাজ্য যখন সরব হচ্ছে, তখন কেন্দ্রীয় অর্থ অব্যবহৃত থেকে যাওয়া বাঞ্ছনীয় নয় বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
সরকারি তথ্য বলছে, কমিশনের বরাদ্দের বড় একটি অংশ অব্যবহৃতও থেকে যায়। গত বছর সেপ্টেম্বর নাগাদ ২১টি জেলা মিলিয়ে দৈনিক প্রায় ৬০ কোটি টাকা করে খরচের লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল নবান্ন। জুন মাসের শেষে পাওয়া তথ্যে সরকার দেখছে, সংশ্লিষ্ট জেলাগুলিতে দৈনিক খরচের গড় পরিমাণ মাত্র ১৬.৬৩ কোটি টাকা। চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রায় ৩১২০ কোটি টাকা হাতে রয়েছে। ২৬ জুন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ৭৬৭ কোটি টাকা। এখনও অব্যবহৃত রয়েছে প্রায় ২৩৫২ কোটি টাকা।
ওই দিন পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ায় খরচ সবচেয়ে কম (১৮-১৯.৫০% এর মধ্যে)। খরচের নিরিখে প্রথম পাঁচটি জেলা কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমান, আলিপুরদুয়ার এবং পূর্ব বর্ধমান। তারা কেউ ৫০% পেরোতে না পারলেও খরচের হার ৩৪-৪৬ শতাংশের মধ্যে। সরকারি তথ্যই বলছে, ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ২৩৫৩.৪২, ২০২১-২২ সালে ৫৭৬৯.৩৭, ২০২২-২৩ বছরে ৪৮৫৬.৮৯ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ৪৩৬২.৮০ কোটি টাকা হাতে ছিল রাজ্যের। তাতে খরচ হয়েছিল যথাক্রমে ১৮.৭৩%, ৪৪.২৪%, ৭৯.০২% এবং ৪৩.৩০% অর্থ।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “ভোটের তিন মাস আদর্শ আচরণবিধি থাকায় টেন্ডার করা যায়নি। ... এ বার দ্রুত কাজে জোর দেওয়া হয়েছে বলে তথ্য ধরে জেলাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছি।”