ফাইল চিত্র
ডিভিসি-র জল ছাড়া এবং বন্যা প্রতিরোধে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে ফের তরজায় জড়াল বিজেপি এবং তৃণমূল।
পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, হুগলি এবং পূর্ব বর্ধমানের একাংশ প্লাবিত হওয়ার জন্য ডিভিসি-র দিকে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যকে না জানিয়ে ডিভিসি আচমকা জল ছেড়ে দেওয়াতেই বিপত্তি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সেই অভিযোগকেই ‘অসত্য’ বলে দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা মানস ভুঁইয়া অবশ্য দিলীপের দাবি খারিজ করে পাল্টা তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী এবং সেচমন্ত্রী বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই ডিভিসি জল ছাড়ে।”
দিলীপের দাবি, সোমবার ডিভিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে তিনি জেনেছেন, ওই সংস্থা রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছাড়ে না। দিলীপ মঙ্গলবার বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ঝাড়খণ্ড সরকার— এই তিন পক্ষের প্রতিনিধিরা ডিভিসি-র কমিটিতে আছেন। তিন পক্ষ মিলে সিদ্ধান্ত নেয়। ব্যারেজের সঞ্চালকরা শুধু সেই সিদ্ধাম্ত পালন করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার যতটা জল ছাড়ার অনুমতি দেয়, ততটা জলই ছাড়া হয় তারা অনুমতি দেওয়ার ছ’ঘণ্টা পরে। জল ছাড়ায় কত দূর অবধি ধাক্কা লাগতে পারে, তা-ও জানানো হয়। কিন্তু প্রতি বারই মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে বিভ্রান্ত করতে অসত্য বলেন।” দিলীপের আরও দাবি, এ বারও জল ছাড়ার আগে রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রীকে ই-মেল করা হয়েছিল। সরকারের আর কোন কোন দফতরকে ডিভিসি মেল করেছে, তার নথিও সংস্থার কাছে আছে।
দিলীপের আরও অভিযোগ, গত ১০ বছরে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে ১২০০ কোটি টাকার বেশি এবং কেন্দ্রের কাছ থেকে ১৭০০-১৮০০ কোটি টাকা আসা সত্ত্বেও বাঁধ মেরামত এবং খাল সংস্কার করা হয়নি। সে জন্যই প্রতি বছর বন্যা হয়। দিলীপ বলেন, “২০১১ সালে মানস ভুঁইয়া যখন সেচমন্ত্রী ছিলেন, তখন কেলেঘাই নদী সংস্কারের জন্য কেন্দ্র ২২৫ কোটি টাকা দিয়েছিল। তার পরে টাকাও গায়েব, নদীও গায়েব। এখন সবং, পিংলা সব ভেসে যাচ্ছে।”
দিলীপের অভিযোগ খারিজ করে মানস জানান, ২০১১ সালে তিনি সেচমন্ত্রী থাকাকালীন ডিভিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান এক বার তাঁকে না জানিয়ে জল ছেড়েছিলেন। তার পর তিনি তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। তার পর থেকে যত দিন তিনি মন্ত্রী ছিলেন, ডিভিসি তাঁকে জানিয়েই জল ছাড়ত। কিন্তু বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে ডিভিসি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে জল ছাড়ে। মানসের কথায়, “ছ’ঘণ্টা আগে
মেল করে দিলেই হবে? ছ’ঘণ্টা কি মানুষদের সরানো এবং সচেতন করার জন্য যথেষ্ট?” দিলীপের দেওয়া টাকার হিসেবকে চ্যালেঞ্জ করে মানস বলেন, “১২০০ কোটি টাকা, ১৭০০ কোটি টাকা কবে কোন প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে, তার হিসাব কেন্দ্র দিক। কেলেঘাই কপালেশ্বরী বাগাইচণ্ডী ৬৫০ কোটি টাকার প্রকল্প। কেন্দ্র বলেছিল তার অর্ধেক দেবে। গত কাল অবধি, ১৭৮ কোটি টাকা দিয়েছে।”