প্রতীকী ছবি।
বাবার অত্যাচারে মা বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তবে নিয়ে যেতে পারেননি দেড় বছরের শিশুপুত্রকে। মাকে ছাড়া সেই দুধের শিশু মাঝে মাঝেই কান্নাকাটি করত। পাড়া পড়শিরা বলছেন, তাতেই অসহ্য লাগতে শুরু করে বাবা রেংটা সোরেন এবং ঠাকুমা মণি সোরেনের। পুলিশ ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শেষে শিশুটিকে খুন করে গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলে তারা। উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘির ভোপলা গ্রামের এই ঘটনায় শিশুটির ঠাকুমা মণিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুড়ে যাওয়া দেহাংশ উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
করণদিঘি থানার আইসি ধ্রুব প্রধান জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত বাবাকে ধরার জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত জানা গিয়েছে, পারিবারিক অশান্তির জেরে ওই শিশুটির মা বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। শিশুটি ছিল বাবা ও ঠাকুরমার কাছে। এ ছাড়া এর পিছনে আর কোনও রহস্য আছে কি না, তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। গ্রামবাসীদের প্রথম সন্দেহ হয় রেংটার আচরণে। তাঁরাই তখন পুলিশকে জানান। পুলিশে তদন্তে নেমে জানতে পারে, মদ্যপ রেংটা মা-ছাড়া শিশুর কান্নায় ‘অতিষ্ঠ’ হয়ে উঠেছিল। অভিযোগ, তার পরেই সে এবং মণি মিলে শিশুটিকে খুন করে। তার পরে গ্রামের পাশে খেতে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
রেংটার স্ত্রী দুলালি মুর্মু পর দিন অর্থাৎ শুক্রবার বিষয়টি জানতে পারেন। তার পরই তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। তার আগেই অবশ্য গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে মণিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে শুক্রবার ইসলামপুর আদালতে পাঠানো হয়।
দুলালি এ দিন বলেন, ‘‘সন্তান হওয়ার পরে স্বামী এতই অত্যাচার করছিল যে মানসিক ও শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। সে রোজ মদ খেয়ে এসে মারধর করত। শেষে আর থাকতে না পেরে বাপের বাড়িতে চলে আসি। ছেলেটাকে আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমার সঙ্গে নিয়ে যেতে দেয়নি। আমাকে ছাড়া ছেলেটা কাঁদত। দুধের শিশু। ওকে খুন করে দিল!’’