মতুয়াদের নাগরিকত্বের প্রশ্নে মতুয়া মহাসমাজের দুই মাথা, তথা প্রাক্তন বনাম বর্তমান সাংসদের লড়াইয়ে ক্রমশই দ্বিধাবিভক্ত মতুয়া মহাসমাজ। এক দিকে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতা ঠাকুর দাবি করছেন, নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করা নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। মতুয়াদের জন্য নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চান তাঁরা। অন্য দিকে, বিজেপির সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য, নিঃশর্ত নাগরিকত্ব চান তাঁরাও। তবে এ ক্ষেত্রে আবেদন তো করতেই হবে।
বৃহস্পতিবার বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘সামনেই বিধানসভা ভোট। কেন্দ্রীয় সরকার জানে, নাগরিকত্ব আইন এখনই কার্যকর করলে তা মতুয়া ও উদ্বাস্তুদের আবেদন করে নিতে হবে। তাতে মতুয়াদের আপত্তি রয়েছে। এটা বুঝতে পেরেই কেন্দ্র আইন কার্যকর করা তিন মাস পিছিয়ে দিয়েছে।’’ মমতার দাবি, কেন্দ্র সিএএ নিয়ে মতুয়াদের বিভ্রান্ত করছে, ভাঁওতা দিচ্ছে। মতুয়া সমাজকে অপমান করছে।
বছরখানেক আগে পাস হলেও নাগরিকত্ব আইনের প্রয়োগ যে কার্যত বিশ বাঁও জলে, তা মনে করছেন মতুয়া সমাজের বড় অংশও। ক্ষোভ বাড়ছে তাঁদের। মমতার কথায়, "দিদি জানিয়েছেন, যাঁরা ভোট দেন তাঁরা নাগরিক। মতুয়াদের বলতে চাই, বিজেপির ফাঁদে পা দেবেন না।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা পিছিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘শাহ এখানে এসে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলতে পারবেন না বলেই আসেননি।’’
বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর এখন দিল্লিতে। তিনি এদিন টেলিফোনে বলেন, ‘‘নাগরিকত্ব নিতে হলে আবেদন তো করতেই হবে। তারপরে সরকার তাঁদের ছাড় দেবেন।’’ শান্তনুর দাবি, ‘‘আমরাও নিঃশর্ত নাগরিকত্বের কথা বলছি। কেন্দ্র তো বলেছে, ধর্মীয় কারণে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হবে। তাঁদের কাছে যে নথিপত্র নেই, সেটা সরকারও জানে।’’
মতুয়াদের মধ্যে পরিচয়পত্র বিলি করে কোটি কোটি টাকা তোলা হচ্ছে বলে এ দিন অভিযোগ করেন মমতা ঠাকুর। তাঁর দাবি, ওই কার্ড থাকলে বলা হচ্ছে নাগরিকত্ব পাওয়া যাবে। মমতার অভিযোগের তির শান্তনুর বিরুদ্ধে। বিজেপি সাংসদের অবশ্য যুক্তি, ‘‘মতুয়াদের কার্ড দেওয়া আমার ঠাকুরদাদার আমল থেকে চলে আসছে।’’