সিবিআইয়ের ‘অপব্যবহার’ নিয়ে এর আগেও বারবার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে। তা সে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার হোক বা মনমোহন সিংহ জমানা! এমনকী দীর্ঘদিন শীতঘুমে থাকার পর মায়াবতীর বিরুদ্ধে সিবিআই একবার হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠায় ইউপিএ সরকারের কাছে কৈফিয়তও তলব করেছিল সর্বোচ্চ আদালত। রোজ ভ্যালি কাণ্ডে সুদীপ-তাপস গ্রেফতার হওয়ার পর সিবিআই তদন্ত সম্পর্কে এই ‘ধারণা’ আরও জোরালো করে তুলতে এ বার ধারাবাহিক প্রচারে নেমে পড়লেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মাটি উৎসবের জন্য সোমবার বর্ধমানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রোজ ভ্যালি কাণ্ডের কথা মুখে না আনলেও সিবিআইয়ের ‘অপব্যবহারের’ জন্য ওই মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুণ্ডপাত করেন মমতা। বলেন, ‘‘কনস্পিরেসি ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন চালু হয়েছে। প্রতিবাদ করলেই সন্ত্রাস, চক্রান্তকারী দল বলা হচ্ছে। দেশে ভয়াবহ জরুরি অবস্থা চলছে।’’
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে যোগসাজসের জন্য ইদানীং বাংলায় শাসক দলের কিছু নেতার বিরুদ্ধে যেমন তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই, তেমনই নোট বাতিলের পর এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও তদন্তে নেমেছে আয়কর দফতর সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সি। সে ক্ষেত্রেও আবার ব্যবসায়ী-রাজনীতিক আঁতাঁত খোঁজা শুরু হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের আশঙ্কা, তাঁদের রাজনৈতিক ভাবে বিপন্ন করে তুলতেই সুপরিকল্পিত ভাবে একাধিক এজেন্সিকে মাঠে নামিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। বিজেপি-র প্রকৃত লক্ষ্য হল, নোট বাতিলের বিরুদ্ধে মমতার আন্দোলনকে ভোঁতা করে দেওয়া। তবে মমতা এ দিন বুঝিয়ে দেন, রাজনৈতিক ভাবেই এই ‘চক্রান্তের’ মোকাবিলা করবেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা সমালোচনা করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘সিবিআই তদন্তের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে। আপত্তি থাকলে দিদি আদালতে যাচ্ছেন না কেন? তা ছাড়া, সিবিআই কাকে ডাকবে তা তো দেখছি উনিই আগাম বলে দিচ্ছেন!’’ অন্য দিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের কারা টাকা লুঠ করেছেন, মমতা জানেন। তাও তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হচ্ছে তাঁকে। কারণ উনি এ-ও জানেন, নইলে এর পর আর পাশে দাঁড়ানোর লোক পাবেন না।’’