জনমন পেতে রাস্তায় নামার নির্দেশ নেত্রীর

সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে উন্নয়নের কাজে নামার জন্য দলের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা পরিষদ এবং পাঁচটি পুরসভা তৃণমূলের দখলে ঠিকই। কিন্তু তৃণমূল সেগুলিতে ভোটে জিতে আসেনি।

Advertisement

অনল আবেদিন ও শুভাশিস সৈয়দ

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৭
Share:

প্রশাসনিক বৈঠকের পথে।— নিজস্ব চিত্র

সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে উন্নয়নের কাজে নামার জন্য দলের জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

জেলা পরিষদ এবং পাঁচটি পুরসভা তৃণমূলের দখলে ঠিকই। কিন্তু তৃণমূল সেগুলিতে ভোটে জিতে আসেনি। বরং নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্যেরা দল বদলানোতেই বোর্ড চলে গিয়েছে শাসক দলের হাতে।

কংগ্রেসের দাবি, কিছু নেতা দল বদলালেও সাধারণ ভোটারেরা তাদের সঙ্গেই আছে। এই দাবির কিছুটা যে অন্তত ঠিক, অস্বীকার করতে পারছেন না তৃণমূল নেতারাও। ওই ভোটারদের নিজেদের দিকে টানতে না পারলে যে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ও পুরভোটে তৃণমূলের ‘মুর্শিদাবাদ বিজয়’ অধরা থেকে যাবে, তা-ও তাঁরা জানেন।

Advertisement

অতএব তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জনসংযোগে জোর দিচ্ছেন। মঙ্গলবার বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠকে দলের জনপ্রতিনিধিদের মমতা বললেন, ‘‘নিজের এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে তাঁদের চাহিদার কথা জেনে নিয়ে উন্নয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। পরিকল্পনা কার্যকর করতে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন।’’

নিজেও এ দিন রাস্তায় নেমেছেন মমতা। প্রশাসনিক বৈঠক শুরুর আগে বহরমপুর সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার হেঁটে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী ও আমলারা। বৈঠকের শুরুতে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও নানা দফতরের কাজের খতিয়ান দেন। এর পরে জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে তাঁদের এলাকার সমস্যার কথা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। জেলা পরিষদে দলবদল করে আসা নেতাদের কথা যেমন শুনেছেন, পাঁচ পুরপ্রধানদের দাবি-দাওয়াও জেনেছেন।

জেলা পরিষদের ‘কংগ্রেসত্যাগী’ কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মির মোশারফ হোসেন ওরফে মধু জেলার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা খাতে রাস্তা তৈরি ও আরআইডিএফ প্রকল্পের আওতায় ১১টি রাস্তার প্রজেক্ট রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলেন। তৃণমূলের দখলে থাকা বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আর্সেনিকমুক্ত পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহের দাবি জানান। মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী এবং আমলাদের বিষয়গুলি দেখতে বলেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ‘লো-ভোল্টেজ’ সরবরাহ এবং লাগাতার লোডশেডিং কেন হচ্ছে, তা দেখতে বলেন বিদ্যুৎ দফতরের সচিবকে। বেলডাঙায় কাপড়ের হাট গড়ে তোলার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হবে বলেও জানান। কিছু এলাকায় সেতু গড়ার দাবি উঠেছিল। বিপুল খরচের কথা জানিয়ে তা নাকচ করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে জেলার অসংগঠিত শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির জন্য পরিকল্পনা তৈরি করার নির্দেশ দেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনকে।

পরে সভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান— হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়াম, মোতিঝিল ও পলাশির যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে পর্যটন শিল্পের একটি সার্কিট গড়বেন তাঁরা। মুর্শিদাবাদ সিল্কের উন্নয়ন ঘটাবেন। শিল্পতালুকে কর্মহীনদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা হবে। যুবকদের কাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে ২৫টি ব্লকে ২৫টি কর্মক্ষেত্র এবং হকারদের জন্য মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে। নদী ভাঙন রোধের সব রকম ব্যবস্থা হবে। নতুন প্রকল্পের জন্য ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, নিজগৃহ নিজভূমি, গীতাঞ্জলি, তাঁতিসাথী, বৃক্ষপাট্টা, জমিপাট্টা, সবুজসাথী, আমার ফসল আমার গাড়ি, আমার ফসল আমার গোলা ও গতিধারার মতো বিভিন্ন প্রকল্পে এ দিন ৮০ হাজার উপভোক্তা উপকৃত হলেন বলে মুখ্যমন্ত্রী সভায় ঘোষণা করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement