চোরাচালান বন্ধে হুঁশিয়ারি পুলিশকে

শুধু রাজ্যের সঙ্গে অসম সীমানই নয়, সেইসঙ্গে জয়গাঁর আন্তর্জাতিক ভুটান সীমান্তে চোরাচালান যে তাঁর উদ্বেগ বাড়িয়েছে, তাও এ দিন স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

টিয়াবন শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:৪৩
Share:

একান্তে: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। মঙ্গলবার কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

আলিপুরদুয়ারের অসম সীমানা নিয়ে চিন্তা কাটছে না মুখ্যমন্ত্রীর৷ উল্টে জয়গাঁর ভুটান সীমান্তের চোরাচালান নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে তাঁর৷ এই দুই জায়গা দিয়ে চোরাচালান বন্ধে বুধবার চালসার কাছে টিয়াবনের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পুলিশকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি৷

Advertisement

জুলাই মাসে শিলিগুড়িতে, উত্তরকন্যায় আলিপুরদুয়ার জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই বৈঠক থেকেই প্রথমবার অসম সীমানা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি৷ ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, গোলমাল পাকাতে অসম সীমানা দিয়ে লোক ও টাকা ঢোকানো হচ্ছে৷ বিভিন্ন চা বাগানেও তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে সেদিন অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তবে ওই বৈঠকেই রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তারা অসম সীমানায় নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেন৷ কিন্তু তাতেও যে কাজের কাজ কিছুই হয়নি তা টিয়াবনের এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়৷

শুধু রাজ্যের সঙ্গে অসম সীমানই নয়, সেইসঙ্গে জয়গাঁর আন্তর্জাতিক ভুটান সীমান্তে চোরাচালান যে তাঁর উদ্বেগ বাড়িয়েছে, তাও এ দিন স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷

Advertisement

ভুটান থেকে এই জয়গাঁ সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়া সোনা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগে ১৪ সেপ্টেম্বর সেখানকার এসডিপিও অনিরুদ্ধ ঠাকুর-সহ তিনি পুলিশ আধিকারিক ও এক আধিকারিক সহ দুই সেনাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ৷ পরবর্তীতে এই ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি৷ টিয়াবনে এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সেই প্রসঙ্গ তোলেননি৷ কিন্তু সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ও তাতে পুলিশের একাংশ জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি যে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ তা মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে৷

এ দিন বৈঠকের মাঝে আলিপুরদুয়ার জেলার এই দুই জায়গার পাশাপাশি জলপাইগুড়ির আন্তর্জাতিক সীমান্তে কীভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি৷ সেইসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ চা শ্রমিকদের জন্য কী কী কাজ করেছেন তারও একটা হিসেব দিচ্ছিলেন তিনি৷ তখনই ডিজিকে থামিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসম সীমানা ও ভুটান সীমান্তে পুলিশকে আরও শক্তিশালী হতে বলুন৷ চোরাচালান যাতে না হয় সেটা দেখবেন৷ এ জন্য জয়গাঁয় পুলিশকে আরও শক্তিশালী করুন৷ অসমের কুমারগ্রাম দিয়েও প্রচুর টাকা ও জিনিসপত্র আসছে৷”

এরপরই রীতিমত হুঁশিয়ারির সুরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “কেউ যদি ভাবে আমি খেয়ে নিয়ে বসে গেলাম সেটা আর হবেনা৷ অসম সীমানা ও জয়গাঁ সীমান্তে নিয়মিত নজরদারি চলবে৷ ওখান থেকে টাকা এনে এখানে অপরাধ করা হবে- তা যেন না হয়৷” একইসঙ্গে বাংলা অসমের কোনও ব্যাপারে যেমন নাক গলাবেনা, তেমনই বাংলায় অসমের নাক গলানোও যে তাঁর না পসন্দ, সেটাও এদিন বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, “বাংলা চলবে বাংলার মতো, আর অসম অসমের মতো৷”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement