ফাইল চিত্র।
নন্দীগ্রাম মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারে তাঁর আস্থা নেই বলে সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার হাই কোর্ট বলল, রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতাকে এই বক্তব্য লিখে জমা দিতে হবে আদালতে। আগামী ১ ডিসেম্বর নন্দীগ্রাম মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ২৯ নভেম্বর ওই লিখিত বক্তব্য জমা দিতে হবে। নন্দীগ্রাম ভোট গণনায় কারচুপি মামলাটি শুভেন্দুর দাবি অনুযায়ী হাই কোর্ট থেকে অন্যত্র সরানো হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে তারপর।
গত ২ মে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছিল। তার ঠিক পাঁচ মাস ১৩ দিন পর সোমবার নন্দীগ্রামের ভোট গণনা মামলাটির শুনানি শুরু হয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি শম্পা সরকারের এজলাসে। সোমবার হাই কোর্টে নন্দীগ্রাম মামলাটির শুনানি পিছনোর আবেদন করেছিলেন রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর আইনজীবীরা। হাই কোর্টে বিচারে অনাস্থা প্রকাশ করে তাঁরা ওই মামলাটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদনও করেন। জবাবে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাই কোর্টে যে বিরোধী দলনেতার আস্থা নেই তা ২৯ নভেম্বরের মধ্যে লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে তাঁকে।’’
রাজ্যের বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে গণনায় কারচুপি হয়েছে জানিয়ে গত ১৭ জুন হাই কোর্টে আবেদন করেছিলেন মমতা। তাঁর নিশানায় ছিলেন নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু। কিন্তু বারবার মামলাটির শুনানি থমকে গিয়েছে। যেমন সোমবারও হল। জুন মাসে হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে মমতা বনাম শুভেন্দু-র মামলাটির শুনানি হয়। কিন্তু ওই বেঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি থাকায় মামলা থেকে অব্যাহতি নেন বিচারপতি চন্দ। এরপর জুলাই মাসে মামলাটি যায় বিচারপতি শম্পা সরকারের বেঞ্চে। তখন বেঞ্চ নিয়ে আপত্তি তোলেন শুভেন্দু। বেঞ্চ বদলের পর তিনি সুবিচার পাবেন না জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান বিজেপি নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক। এমতাবস্থায় মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ায় বিচারপতি সরকার তিন মাসের জন্য হাই কোর্টে শুনানি মুলতুবি করে দেন। নভেম্বরে ফের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। সেই মতো সোমবার দুপুরে হাই কোর্টে নন্দীগ্রাম মামলাটি ওঠে। সোমবার ফের মামলাটির শুনানি পিছোল।
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে মমতা ১৭৩৬ ভোটে হেরে গিয়েছিলেন শুভেন্দুর কাছে। তার তিন দিন পরেই তিনি ভোটে কারচুপির অভিযোগ আনেন। একটি এসএমএস দেখিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হয়েছে রিটার্নিং অফিসারকে।’’ ওই এসএমএসে লেখা ছিল, রিটার্নিং অফিসার যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন তবে তাঁর প্রাণসংশয় হতে পারে। মমতাকে পাঠানো ওই এসএমএসে ইংরেজিতে এ-ও লেখা ছিল যে, ‘আমাকে বাঁচান। আমার পরিবার শেষ হয়ে যাবে। আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোনও উপায় নেই আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাকে খুন করা হতে পারে। আমাকে ক্ষমা করুন। আমার ছোট মেয়ে রয়েছে।’ মমতা বলেছিলেন ওই এসএমএস বার্তাটি নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসার কিশোর বিশ্বাসের। এর এক মাস পরেই হাই কোর্টে আবেদন করেন মমতা।