আশীর্বাদ: উত্তরকন্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
স্বচ্ছতা আনাই মূল লক্ষ্য। সে জন্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজে দু’টি দাওয়াই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমত, প্রকল্পের কাজের ঠিকঠাক বাজেট দিতে হবে। কাজ ছোট ভাগে ভাগ করে বাজেট দিলে চলবে না। দ্বিতীয়ত, টেন্ডারে ন্যূনতম বাজেট দিলেই তা পাশ করা দেওয়া যাবে না। টেন্ডারের বাজেট বাস্তবসম্মত হতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, না হলে বাজে কাঁচামাল দিয়ে কাজ হবে, যেটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।
উত্তরবঙ্গ সফরের প্রথম দিনে শিলিগুড়িতে পৌঁছেই উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ির জেলা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের শুরুটা করেন জলপাইগুড়িরই আদি বাসিন্দা, বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে। তিনি প্রথম বাজে খরচ কমানোর প্রসঙ্গ তোলেন। তার পরে উন্নয়নের কাজের ঠিকঠাক বাজেট দিতে বলে টেন্ডার নিয়েও বাস্তববাদী হতে বলেন।
কী ভাবে, তার ব্যাখ্যা দেন মুখ্যসচিব। তাঁর কথায়, “দশ লাখের টাকার কাজ কেউ ৬ লাখ টাকায় করবে বলে জানান। সেটা কতটা বাস্তবসম্মত তা যাচাই করে দেখতে হবে।” টেন্ডারের ক্ষেত্রে যে ন্যূনতম দর নিতেই হবে, এখন এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। উপরন্তু, এই দর দিয়ে টেন্ডার হাসিল করলেন অনেক সময়েই বাজে কাঁচামাল দিয়ে প্রকল্পের কাজ হয়। ফলে কিছু দিনের মধ্যে সেই কাজ আবার করার প্রয়োজন হয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, এই ভাবে খরচ বেড়ে যায়। তাঁদের কথায়, প্রথমেই যদি গোটা প্রকল্পের ঠিক বাজেট তৈরি হয় এবং সঠিক টেন্ডার বাছাই হয়, তা হলে কাজের খরচ যেমন কমে, তেমনই সেই কাজ টেঁকসইও হয়।
স্বচ্ছতার এই বার্তার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী অপচয় বন্ধের উপরেও জোর দেন। বলেন, ‘‘একটা টাকারও মূল্য আছে। এক পাই-পয়সা অপচয় করবেন না।’’ ফুলবাড়ি-ডাবগ্রাম এলাকায় শিল্পের কাজে জমি ব্যবহারের জন্য বেশি ফি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন এক শিল্পপতি। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “একটা পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন বলে নিজেদের হনু ভাবছেন নাকি। সব কেড়ে নেব।” নিজেই তোলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কৃষিভবনের কথা। সেই বাড়ি বানাতে ১৯ কোটি টাকার বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছিল বলে উল্লেখ্য করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, “অফিস হবে নাকি ফাইভ স্টার হোটেল!”