(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুনীতা কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
নীতি আয়োগের বৈঠকে শনিবার যোগ দেবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে শুক্রবার দিল্লি পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের বাড়িতে গেলেন তিনি। দেখা করলেন জেলবন্দি আপ প্রধানের স্ত্রী সুনীতা কেজরীওয়ালের সঙ্গে। আপের তরফে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নীতি আয়োগের বৈঠক রয়েছে। বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রায় সকলেই সেই বৈঠক বাতিল করলেও উপস্থিত থাকছেন মমতা। সেই বৈঠকে যোগ দিতেই শুক্রবার মমতা পৌঁছেছেন দিল্লি। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতা যান কেজরীর বাড়িতে। ২১ মার্চ গ্রেফতার হয়েছেন কেজরীওয়াল। দিল্লির আবগারি নীতিকাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁর বিরুদ্ধে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তোলা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় কেজরীকে অন্তর্বর্তী জামিন দেয়। কিন্তু সিবিআইয়ের করা মামলায় তিহাড়েই রয়েছেন তিনি। এ বার সেই কেজরীর বাড়িতেই গিয়ে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বললেন মমতা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, কেজরীর বাবা এবং মায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন মমতা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আপ সাংসদ রাঘব চড্ডা। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, জেলবন্দি কেজরীর শরীর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মমতা। সেই নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। ‘সঙ্কট’-এর সময় আপের পাশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চড্ডা।
নীতি আয়োগের বৈঠকে মমতা যোগ দেবেন কি না, সেই নিয়ে চলছিল জল্পনা। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপালও মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বৈঠকে যোগ না-দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তার পরেও মমতা যোগ দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মমতাকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন বাংলার সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। একটি অংশ মনে করতে শুরু করেন, নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিলে বিরোধী জোটে ‘একা’ হয়ে পড়তে পারেন মমতা। তার প্রেক্ষিতে শুক্রবার দিল্লিতে চাণক্যপুরীর নতুন বঙ্গভবনে মমতা বলেন, ‘‘নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাজেট পেশের আগেই নিয়েছিলাম। কিন্তু সবাই মিলে আলোচনা করে যদি কোনও সিদ্ধান্ত হত, তা হলে অন্য কিছু ভাবতাম।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন, নীতি আয়োগের বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও যোগ দিতে পারেন। এর পরেই কেজরীর বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, বিরোধী জোটের অন্দরে মমতা যে ‘একা’ নন, তা বোঝাতেই কেজরীর বাড়িতে গেলেন মমতা।