খেজুরির ঠাকুরনগর এলাকার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ছবি: ফেসবুক।
কাজে ঘাটতি হবে না। হবে উন্নতি। খেজুরির ঠাকুরনগরের প্রশাসনিক সভা থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ‘নিশ্চিন্ত’ করতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার পূর্ব মেদিনীপুরের এই সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সব সচিবের উদ্দেশে বলেন, ‘‘সকলকে বলব ভিলেজ ভলান্টিয়ারদের কাজে লাগান। সিভিকদের কাজে লাগান।’’ এর পরে মমতার আশ্বাস, ‘‘সিভিক ভাই-বোনেরা জেনে রাখো, আগামী দিনে আস্তে আস্তে তোমাদের অনেক উন্নতি হবে। তোমাদের একটা ‘কোটা’ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রতি বছর সিভিক থেকে কনস্টেবল করা হবে।’’
বাঁকুড়ায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের পড়ানোর প্রশাসনিক নির্দেশিকা ঘিরে সম্প্রতি হইচই পড়ে গিয়েছিল। বিষয়টি গড়িয়েছিল হাই কোর্টে। শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা দিয়ে জানায়, আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনও কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের যুক্ত করা হবে না। তাঁরা শুধুমাত্র ট্রাফিক সামলানো বা পার্কিং নিয়ন্ত্রণের মতো কাজে যুক্ত থাকবেন। এর পরেই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি সিভিকদের কাজের সুযোগ কমতে চলেছে? এ দিন মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য সিভিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আগে নিয়ম ছিল না, সিভিক কেউ মারা গেলে তাঁদের পরিবারের কেউ চাকরি পাবে। সেটাও আমরা করে দিয়েছি। এবং সকলের জন্যই করা হয়েছে।’’
সিভিকদের ঠিক কোন কাজে লাগানো হবে, তা অবশ্য স্পষ্ট করেননি মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানব কুমার সিংঘল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভামঞ্চে সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাজ নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। তবে এটা নিয়ে লিখিত কোনও নির্দেশিকা আমাদের কাছে এসে পৌঁছয়নি।’’
তবে পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে রাজনৈতিক মহলে তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুদাম পণ্ডিতের দাবি, ‘‘সিভিক এবং ভিলেজ পুলিশ তো শাসক দলের ক্যাডার। এদের দিয়ে পঞ্চায়েতে মনোনয়ন করতে না দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চাইছে তৃণমূল। সিভিকদের যাতে দলীয় কাজে ব্যবহার করা হয়, পরোক্ষে সে কথাই বলতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’ পূর্ব মেদিনীপুরের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছে, সিভিকরা কী কাজ করবেন। ফলে, এ নিয়ে অযথা রাজনীতি করার মানে হয় না।’’