—ফাইল চিত্র।
দেশে যখন টোম্যাটোর মতো আনাজের দাম বাড়ছে, তখন একশো দিনের কাজের টাকা না দিয়ে, নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘আমেরিকাকে কত টাকা দিয়ে এলেন’, সে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির ক্রান্তির জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আমেরিকাকে কত টাকা দিয়ে এলেন? রাশিয়াকে কত টাকায় কিনলেন? দেশটা বিক্রি করে দিচ্ছেন।” ছ’দিনের আমেরিকা এবং মিশর সফর সেরে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেছেন সোমবার। মোদীর আমেরিকা সফরে প্রতিরক্ষা খাতে নানা চুক্তি হয়েছে। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, “যাঁদের দেশ চালানোর দায়বদ্ধতা নেই, তাঁরাই এ সব কথা বলতে পারেন। দেশ নয়, এঁদের চিন্তা শুধু ভোট।”
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে টোম্যাটোর দাম বেড়ে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মুম্বইয়ে টোম্যাটোর দাম ১২০ টাকা কেজি, দিল্লিতে দাম ১০০ টাকা কেজি। টোম্যাটোর জন্য সহায়ক মূল্যও কেন্দ্র দেয় না।” ঘটনাচক্রে, এ দিনই শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চর্তুবেদীও টুইট করেছেন, “দেশের অর্থমন্ত্রী কি টোম্যাটো খান? টোম্যাটোর ক্রমবর্ধমান দাম নিয়ে আপনি কি কোনও জবাব দিতে সক্ষম?” মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, “আমার এখানে কৃষকদের কোনও সমস্যা হলে, আমি দেখে নিতাম।”
আমেরিকা ও মিশরে প্রধানমন্ত্রীর সংখ্যালঘু-বার্তা নিয়ে মমতার কটাক্ষ, “এখন হঠাৎ কিছু সংখ্যালঘুর সঙ্গে ছবি দেখিয়ে বেড়াচ্ছে, যেন সংখ্যালঘুদের কত ভালবাসে। আমি ওদের চিনি।” কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আয়ু আর ছ’মাস বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ভারতবর্ষকে আমি যদি চিনে থাকি, আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি ধুয়ে যাবে।” এ দিন সভামঞ্চ থেকে ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র নাম করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আপনারা লিখেছেন, হেরে গেলেও আমার সরকার থাকবে। কোথায় হারবে? তৃণমূল কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতবে, পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতবে, জেলা পরিষদে জিতবে, সারা বাংলায় জিতবে, সারা দেশে জিতবে। কার ক্ষমতা আছে তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানোর?’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘কথাটা বলতে গিয়ে পুরোটা লেখেননি, অর্ধেক লিখেছেন। মানুষকে বিভ্রান্ত করা আপনার কাজ? তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া, বাংলায় কে আছে? লক্ষ্মীর ভান্ডার কে দেবেন, আপনারা দেবেন? লিখতে হলে সঠিক ভাবে লিখুন, নিরপেক্ষ লিখুন।’’ সোমবার কোচবিহারের চান্দামারিতে জনসভায় মমতা বলেছিলেন, ‘‘আমাদের সরকার পঞ্চায়েত ভোটে সব হেরে গেলেও তো চলে যাবে না। আমাদের সরকারই থাকবে। ডবল ইঞ্জিন বিদায় নেবে। তাই চিন্তা করার, ভয় করার কোনও প্রয়োজন নেই।’’