মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সীমানা নির্ধারণ করে দিলেন সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। ফাইল চিত্র।
দেবী কালী নিয়ে মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যের সময়ে পাশে ছিল না তৃণমূল। তবে প্রকাশ্যে তাঁকে কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি যে ক্ষুব্ধ তা দলের বিভিন্ন নেতা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। এ বার সাংগঠনিক এলাকা ভাগ নিয়েই মহুয়াকে ধমক দিলেন মমতা। জানিয়ে দিলেন, নিজের লোকসভা এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে কৃষ্ণনগরের সাংসদকে।
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের বুথকর্মী সম্মেলনে মমতার ধমক খেতে হয় সাংসদ মহুয়াকে। বক্তৃতা করার সময়েই মমতার নজর পড়ে মহুয়ার দিকে। তখনই তিনি বলেন, ‘‘করিমপুর আর মহুয়ার জায়গা নয়। ওটা আবু তাহেরের জায়গা। উনি দেখে নেবেন। তুমি তোমার লোকসভা নিয়ে থাকো।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রথমবার করিমপুর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন মহুয়া। কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে তাপস পালের বদলে কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে প্রার্থী করে তৃণমূল। ভোটে জিতে নিজের বিধায়কপদ ছেড়েও দেন মহুয়া। ওই আসনে উপনির্বাচনে জেতেন বিমলেন্দু সিংহ।
করিমপুর বিধানসভা কেন্দ্র নদিয়া জেলার মধ্যে হলেও, তা মুর্শিদাবাদ লোকসভা এলাকার অংশ। তাই তৃণমূলের সাংগঠনিক নিয়ম অনুযায়ী, এখন ওই বিধানসভা এলাকার সঙ্গে কোনও ভাবেই যুক্ত থাকার কথা নয় মহুয়ার। তা সত্ত্বেও বর্তমান বিধায়ক বিমলেন্দুকে এড়িয়ে নিজের পুরনো এলাকায় মহুয়া নিজের মর্জিমাফিক রাজনীতি করেন বলে দলের একাংশের অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই অভিযোগ ওঠায় বেজায় বিরক্ত তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই রাগই বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে এনে দেন মমতা। মহুয়াকে নিজের লোকসভা এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে বলেন।
এর আগে লোকসভা ভোটের পর মহুয়াকে কৃষ্ণনগর জেলায় তৃণমূলের সভাপতি করেও করিমপুর থেকে তাঁকে সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির বদল আসেনি বলেই অভিযোগ। তাই এ বার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগী হয়ে তাঁকে করিমপুর থেকে সরে যেতে নির্দেশ দিলেন বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। সঙ্গে তাঁর জায়গায় করিমপুর এলাকার সাংসদ আবু তাহের খানকে তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিতে মঞ্চ থেকেই নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
তৃণমূল নেত্রীর এমন ঘোষণায় খুশি নদিয়া জেলা তৃণমূলের বড় অংশ। যাঁরা এত দিন করিমপুরে মহুয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে বিরক্ত ছিলেন, তাঁরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। তেমনই এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা দলে দ্বন্দ্ব চাই না। তাই চেয়েছিলাম করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগরের সাংসদ দূরে থাকুন। এত দিন যা সম্ভব হচ্ছিল না, এ বার তা নেত্রীর নির্দেশে কার্যকর হবে বলেই আমরা আশা করছি।’’ প্রসঙ্গত, এর আগে গোয়া তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকেও মহুয়াকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর বদলে গোয়া তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন কীর্তি আজাদ।