মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডির সর্বস্তরে রদবদল করা হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্ন থেকে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স এবং ‘অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো’-কে আরও শক্তিশালী করারও নির্দেশ দিলেন তিনি। রাজ্যে আলু-পেয়াঁজের মূল্যবৃদ্ধির উপর রাশ টানতে একাধিক পদক্ষেপের কথা জানাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময়েই উঠে আসে নিচুতলার পুলিশের একাংশের গাফিলতির কথা। এমনকি, নিচুতলার সরকারি আধিকারিক ও কর্মীদের একাংশের উপরেও অসন্তুষ্ট মমতা। বালি-কয়লা পাচারের অভিযোগের সঙ্গেও কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশের নিচুতলার একাংশকে জুড়ে দেন তিনি।
রাজ্যে কয়লা এবং বালি পাচারের অভিযোগ নতুন নয়। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, রানিগঞ্জ এলাকায় মাঝেমধ্যেই বেআইনি ভাবে কয়লা তোলা এবং পাচারের অভিযোগ উঠে আসে। একই ধরনের অভিযোগ ওঠে বালি চুরির ক্ষেত্রেও। রাজ্যের একাধিক জেলায় নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি চুরির অভিযোগ উঠে এসেছে। কয়লা ও বালি পাচারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধীরা বার বার আক্রমণ শানিয়েছে শাসকদল তৃণমূলের দিকে। যা একেবারেই বরদাস্ত করতে চান না মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির রং না দেখে পদক্ষেপ করার কথা বলেন তিনি। তবে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে এই অবৈধ কারবারে সাহায্য করছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং পুলিশের নিচুতলার একাংশ।
নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সিআইএসএফের একাংশ বা পুলিশের একাংশ টাকা খেয়ে চুরি করবে— এটা আমি হতে দেব না। যদি কোনও রাজনৈতিক দলের লোকও যুক্ত থাকেন, তাঁকে আইনত চেপে ধরুন। জেলে পাঠান।” তোলাবাজির সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকলে সরকার যে তাঁকে আড়াল করবে না, তা-ও বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি ভিন্রাজ্য থেকে রাজ্যে অস্ত্র প্রবেশ করছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা বন্ধ করতে রেলের কর্তাদের সঙ্গে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেন তিনি। সতর্ক করেন রাজ্যের বিভিন্ন শপিং মলের কর্তৃপক্ষকেও। সমাজবিরোধীরা শপিং মলে আশ্রয় নিচ্ছে বলে সন্দেহ মমতার। শপিং মলকে ব্যবহার করে জাল নোটের কারবার ছড়ানো হতে পারে বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী। জাল নোট কী ভাবে রাজ্যে প্রবেশ করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রতিটি জেলার সীমানায় এবং আন্তঃরাজ্য সীমানায় বাধ্যতামূলক নাকা চেকিংয়ের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কিছু দিন আগেই কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কসবায় তাঁর বাড়ির সামনেই গুলি করার চেষ্টা হয়। তবে পিস্তল কাজ না করায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান তিনি। ওই ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে বিহারের দুষ্কৃতীদলের যোগের কথা। এর আগেও বিহার থেকে বাংলায় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। একাধিক গ্রেফতারিও হয়েছে।