গ্রাফিক—সনৎ সিংহ
বারাণসী থেকে কলকাতা ফেরার পথে বড় বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছেন, সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের আগে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশ সফর সেরে ফেরার সময় তাঁর বিমানের সামনে চলে এসেছিল আর একটি বিমান। তাতে বড় বিমান দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কিন্তু শেষমুহূর্তে তিনি বেঁচে যান। মমতা জানিয়েছেন, স্রেফ পাইলটের দক্ষতাতেই রক্ষা পান তিনি। তবে তাঁর কোমরে আঘাত লাগে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সেই ব্যথা এখনও রয়েছে তাঁর।
গত শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ সফর সেরে কলকাতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফেরার পথে তিনি বিমান বিভ্রাটে পড়েন। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুললে বিমানবন্দরের তরফে খারাপ আবহাওয়াকে দায়ী করা হয়। পাল্টা তৃণমূল জানতে চায়, সত্যিই কি আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা ছিল? না কি অন্য কোনও হেলিকপ্টার মমতার বিমানের সামনে চলে এসেছিল? সোমবার বিধানসভার কক্ষে ঢোকার আগে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিলেন মমতা নিজেই।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিধানসভার অধিবেশন। বিধানসভার কক্ষে প্রবেশ করার আগে অলিন্দে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছিলেন মমতা। সাংবাদিকরা তাঁর বিমান সংক্রান্ত গোলযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, খারাপ আবহাওয়া দায়ী নয়, তাঁর বিমানের মুখোমুখি চলে এসেছিল আরকটি বিমান । দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
মমতা জানান, মুখোমুখি একই লাইনে চলে এসেছিল বিমান দু’টি। কিন্তু পাইলট অত্যন্ত দক্ষতায় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আট হাজার ফুট নীচে নামিয়ে আনেন মুখ্যমন্ত্রীর বিমানটিকে। তাতেই শেষপর্যন্ত দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় বলে জানিয়েছেন মমতা।
আপাতত মুখ্যমন্ত্রীর বিমান বিভ্রাটের ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন। যদিও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যার যে কারণ দেখিয়েছিল, তা বদলায়নি। তবে তৃণমূল ইউনিয়নের প্রশ্ন, বার বার মুখ্যমন্ত্রীর বিমানেই বিভ্রাটের ঘটনা কেন ঘটছে?
এই প্রশ্নে ইতিমধ্যেই দমদম বিমানবন্দরে বিক্ষোভ দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি সমর্থিত কন্ট্রাক্টর ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। তাঁরা জানতে চেয়েছে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের (এটিসি) কাজকর্মে কি কোনও গাফিলতি ছিল? মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ বিমান যে ওই রুট দিয়েই আসবে, তা আগে থেকে জানত এটিসি। ফলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল, রুট ক্লিয়ার রাখা এবং এই রুটের আপডেট দেওয়া। আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথ নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাতে আরও সজাগ দৃষ্টি রেখে চলেন, সেই দাবিও তৃণমূলের তরফে জানানোর কথা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে।