টাকা নেই, গ্রন্থাগারে তাই নেই মমতার বই

হাওড়া জেলা গ্রন্থাগারিক অমিতকুমার পাল জানাচ্ছেন, সম্প্রতি স্কুলের পাঠ্যবই কেনার জন্য রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর থেকে ন’হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বই কেনার জন্য কোনও অর্থ আসেনি।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩৩
Share:

বই কেনার টাকা বরাদ্দ নেই। তাই গ্রন্থাগারে ঠাঁই মিলছে না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই!

Advertisement

গত মার্চ মাসে রাজ্যের সমস্ত গ্রন্থাগারে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট পাবলিক লাইব্রেরি উন্নয়ন মঞ্চ। গ্রন্থাগার দফতর সূত্রের খবর, ওই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ
করেছিল বিভিন্ন জেলা প্রশাসন। হাওড়া জেলা থেকে এই প্রস্তাব আসায় প্রথমে সেখানকার গ্রন্থাগারগুলিতেই এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। তার তা করতে গিয়ে প্রথমেই ধাক্কা
খেয়েছে হাওড়া।

হাওড়া জেলা গ্রন্থাগারিক অমিতকুমার পাল জানাচ্ছেন, সম্প্রতি স্কুলের পাঠ্যবই কেনার জন্য রাজ্য গ্রন্থাগার দফতর থেকে ন’হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বই কেনার জন্য কোনও অর্থ আসেনি। উন্নয়ন মঞ্চের সম্পাদক নিশীথ সরকার বলেন, ‘‘অর্থের অভাবে মুখ্যমন্ত্রীর বই কেনা যাচ্ছে না! দফতর যথেষ্ট অর্থ ব্যয় করে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বই গ্রন্থাগারে রাখার জন্য টাকা পাওয়া গেল না, এটা খুবই দুর্ভাগ্যের।’’ তবে এতে দমে যেতে রাজি নয় উন্নয়ন মঞ্চ। সমস্যার সমাধানে সাধারণ মানুষের থেকে ইতিমধ্যেই ‘অনুদান’ সংগ্রহ করতে শুরু করেছে তারা। তা দিয়েই আগামী ৩০ অগস্ট, সাধারণ গ্রন্থাগার দিবসে হাওড়ার ১০টি গ্রন্থাগারে মুখ্যমন্ত্রীর লেখা বই দেবে উন্নয়ন মঞ্চ। নিশীথবাবুর কথায়, ‘‘গ্রন্থাগার দফতর অর্থ না দিলেও অনুদান নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর বই দেব। কারণ তাঁর জীবন সংগ্রাম থেকে কন্যাশ্রীর সফলতা— সব কিছু সকলের জানার প্রয়োজন রয়েছে।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার সামলানোর অনেক আগে থেকেই লেখালেখি করেন মমতা। লিখেছেন পাহাড়, জঙ্গলমহল এবং নিজের জীবনের নানা সংগ্রামের কাহিনি নিয়ে। ‘নামাঞ্জলি’, ‘কথাঞ্জলি’, ‘অনুভূতি’, ‘বাংলার কন্যাশ্রী আজ বিশ্বজয়ী’, ‘বিকেলটা হারিয়ে গেছে’, ‘জীবন-সংগ্রাম’, ‘আজব ছড়া’র মতো বেশ কিছু বইও রয়েছে তাঁর। কয়েক বছর ধরে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, সিবিএসই, আইসিএসই, আইএসসি পরীক্ষায় কৃতীদের পুরস্কৃত করার সময়ে ওই সমস্ত বইও উপহার দেওয়া হয়। বইমেলা এবং
বিশ্ববাংলার স্টলেও কিনতে পাওয়া যায় ওই বইগুলি।

তবে গ্রন্থাগারে মমতার বই রাখার এই উদ্যোগের বিরোধীতাই করেছে বিজেপি। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্থ থাকলেও গ্রন্থাগারে
মুখ্যমন্ত্রীর বই থাকা উচিত নয়। আর যে অনুদানে বই দেওয়া হবে, তার উৎস কী সেটাও জানাও দরকার।’’ তবে গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর আশ্বাস, ‘‘সমস্ত জেলায় যেমন অর্থ পৌঁছনো হচ্ছে, হাওড়াতেও তেমন দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement