সাত দিনে পরিষদের কাজকর্ম শুরু, চান মুখ্যমন্ত্রী

সহকারি সভাধিপতি এবং জেলাপরিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তৃণমূলের থাকা সত্ত্বেও কেন কাজকর্ম বন্ধ হয়ে রয়েছে, তা জেলাশাসকের কাছ থেকে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত ও নীহার বিশ্বাস

গঙ্গারামপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০২
Share:

বার্তা: প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর আলোচনা গঙ্গারামপুরের বৈঠকে। ছবি: অমিত মোহান্ত

দলত্যাগী সভাধিপতিকে ফেরাতে দু’দিন আগেই তৎপরতা বাড়িয়েছিল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে তার পরেও সভাধিপতি লিপিকা রায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভায় আসেননি। কিন্তু তৃণমূলের তরফেও বিপ্লববাবুকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া হল। জেলা সদর বালুরঘাটের বদলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভা করলেন বিপ্লববাবুর খাসতালুক গঙ্গারামপুরেই। মঙ্গলবার দুপুরে গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে আয়োজিত প্রশাসনিক বৈঠকে সভাধিপতির খোঁজও করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন তাঁকে না দেখে মুখ্যমন্ত্রী আইনের মাধ্যমে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের জটিলতা কাটাতে নির্দেশ দেন।

Advertisement

সহকারি সভাধিপতি এবং জেলাপরিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য তৃণমূলের থাকা সত্ত্বেও কেন কাজকর্ম বন্ধ হয়ে রয়েছে, তা জেলাশাসকের কাছ থেকে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক নিখিল নির্মল বলেন, ‘‘ওরা কাজ করতে বাধা দিচ্ছেন।’’ ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘‘কাজ করতে দিচ্ছে, মানেটা কি! ১৩ জন বেশি। না ৫ জন। ১৮ আসনের জেলাপরিষদে সভাধিপতি সহ মোট ৫ জন সদস্য বিজেপিতে। সহকারি সভাধিপতি সমেত বাকি ১৩ জন তৃণমূলে রয়েছেন।’’

মমতা মঞ্চ থেকেই প্রাক্তন মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর ডেকে বলেন, ‘‘শঙ্করদা নামকরা উকিল।’’ জেলা পরিষদের আইনি অবস্থা নিয়ে তাঁর মতামত জানতে চান। শঙ্করবাবুর জবাব, ‘‘এক বছরের সময়সীমা পার হয়েছে। ফলে জেলাপরিদের স্থায়ী সমিতিগুলির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’

Advertisement

দেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সূত্রে খবর, লিপিকাদেবীকে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সভায় হাজির করিয়ে জেলা পরিষদের পাশা উল্টে দেওয়ার আশা করেছিল তৃণমূল দফতর। কিন্তু পরিস্থিতি আঁচ করে তার আগেই সভাধিপতি লিপিকাকে অন্তরালে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে। মমতা এ দিন সভায় জেলা পরিষদের কাজ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ জেলায় ১০০ দিনের প্রকল্প থেকে গ্রাম উন্নয়নে হতাশাজনক অবস্থার কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনের আধিকারিকদের জানিয়ে দেন আগামী সাত দিনের মধ্যে জেলাপরিষদের কাজ শুরু করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘শঙ্করদা দেখে দেবেন।’’

এ দিন সারাক্ষণ সভাধিপতি লিপিকার ফোন সুইচড অফ ছিল। বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র বলেন, ‘‘কাজ নিয়ে তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত আইনে আড়াই বছরের আগে স্থায়ী সমিতিতেও অনাস্থা আনা যায় না। জোর করে তা করা হলে চ্যালেঞ্জ করা হবে।’’ সেক্ষেত্রে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিপ্লব।

এখন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে জেলাপরিষদ নিয়ে টানাপড়েনের জট কাটিয়ে প্রশাসন সাত দিনের মধ্যে কাজ শুরু করে পারে কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন জেলার বাসিন্দারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement