প্রাক্তন মন্ত্রীদের সরকারি কমিটিতে জায়গা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রাক্তন মন্ত্রীদের সরকারি কমিটিতে জায়গা দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বারের ভোটে ৫ জন মন্ত্রী পরাজিত হওয়ায় মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়ে গিয়েছেন। আবার টিকিট দেওয়া হয়নি ৩ জন মন্ত্রীকে। আর টিকিট পেয়ে ভোটে জিতলেও ৬ জনকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দেননি মমতা। ভোট প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ায় একজনকে মন্ত্রী করা যায়নি। তাই এই ১৫ জন প্রাক্তন মন্ত্রীর মধ্যে বেশির ভাগকেই সরকারের বিভিন্ন কমিটিতে স্থান দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে বলেই প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এই তালিকার সূত্রপাত হয়েছে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি থেকে পরাজিত মন্ত্রী গৌতম দেবকে দিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই বিভিন্ন পুরসভায় পুর প্রশাসক নিয়োগের কাজ শুরু করেন মমতা। এই প্রক্রিয়ায় শিলিগুড়ি পুরসভার পুর প্রশাসক করা হয়েছে গৌতমকে। ১০ বছর মন্ত্রিত্বের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। কোচবিহারের নাটাবাড়ি থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও কোচবিহার উত্তরে বিনয়কৃষ্ণ বর্মন পরাজিত হয়েছেন। ২০১৬ সালে কোচবিহার থেকে এই ২ জন বিধায়ককেই মন্ত্রী করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, পরাজিত এই ২ বিধায়কের মধ্যে একজনকে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান করা হবে। তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, দিদি সবাইকে কাজে লাগাতে চান। তাই যাঁরা মন্ত্রিসভায় জায়গা পাননি, তাঁদেরও কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।
বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে বিধানসভার উপমুখ্যসচেতক পদে ফেরানো হয়েছে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে মন্ত্রী করা হয়েছিল। রামপুরহাটের ৫ বারের বিধায়ক আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় গত মন্ত্রিসভার কৃষিমন্ত্রী ছিলেন। তাঁকে বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকারের প্যানেলে রাখা হয়েছে বিগত সরকারে মন্ত্রী থাকা অসীমা পাত্রকে। কাকদ্বীপের ৫ বারের বিধায়ক মণ্টুরাম পাখিরা গত ২ দফায় সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন। এবার তাঁর বদলে মন্ত্রী করা হয়েছে সাগরের বর্ষীয়ান বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাকে। এত দিন তিনি ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান। প্রশাসন সূত্রে খবর, মণ্টুরামকে বঙ্কিমের ছেড়ে যাওয়া পদে বসানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।
উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজিকে বিধানসভার কোনও কমিটির চেয়ারম্যান করা হবে বলে সূত্রের খবর। পশ্চিমবঙ্গ খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন তেহট্টের প্রয়াত বিধায়ক গৌরী দত্ত এবং মঞ্জুষা-র চেয়াম্যান ছিলেন শান্তিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক অজয় দে। সম্প্রতি ২ জনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। সেই পদেও কোনও প্রাক্তন মন্ত্রীকে বসানো হবে বলে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতর সূত্রে খবর। ভোটে না দাঁড়ানো পূর্ণেন্দু বসুও কোনও সরকারি কমিটিতে জায়গা পাবেন বলেই জানা যাচ্ছে। বলরামপুর থেকে পরাজিত শান্তিরাম মাহাতো ও সোনামুখী থেকে পরাজিত শ্যামল সাঁতরাকে কোন সরকারি কমিটিতে জায়গা দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা চলছে। শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ভোট বাকি থাকায় এখনই কোনও কমিটিতে জায়গা দেওয়া হবে না বলেই জানা গিয়েছে। টিকিট না পাওয়া চাকদহের প্রাক্তন বিধায়ক রত্না কর ঘোষকে নিয়ে এখনও দলের কোনও ভাবনা নেই বলেই খবর।সেই সঙ্গে টিকিট না পেয়ে ক্ষোভে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া তপনের প্রাক্তন বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদাকে দলে ফেরানো নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।