ফিরে আসুন, বিমুখ ডাক্তারদের ডাক দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রীই

অনেক ক্ষোভে, অনেক বিতৃষ্ণায় সরকারি চাকরি ছেড়েছেন তাঁরা।কেউ বিদেশে গবেষণাপত্র পড়তে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েও সরকারি অনুমোদন পাননি। সেই ক্ষোভে চাকরি ছেড়েছিলেন।

Advertisement

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ১৩:২০
Share:

অনেক ক্ষোভে, অনেক বিতৃষ্ণায় সরকারি চাকরি ছেড়েছেন তাঁরা।

Advertisement

• কেউ বিদেশে গবেষণাপত্র পড়তে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েও সরকারি অনুমোদন পাননি। সেই ক্ষোভে চাকরি ছেড়েছিলেন।

• কোনও বিশেষ বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসককে আবার এমন জায়গায় বদলি করা হয়েছিল, যেখানে সেই বিভাগটিই নেই। সরকারি হাসপাতাল থেকে বিদায় নিতে তাই দ্বিধা করেননি সেই চিকিৎসক।

Advertisement

• কেউ আবার কোনও নেতার ‘আবদার’ রাখতে না-পারায় প্রকাশ্যে অপমানিত হয়ে তড়িঘড়ি পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজনে এমনই চাকরি ছেড়ে দেওয়া ডাক্তারদের সরকারি পরিষেবায় ফিরে আসার ডাক দিচ্ছে রাজ্য সরকার। মূলত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এই প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই কয়েক জন চিকিৎসকের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়েছে। সরকারি চাকরিতে থাকাকালীন তাঁদের কাজের মান কেমন ছিল, তার সবিস্তার রিপোর্ট-সহ তালিকা তৈরি করছে স্বাস্থ্য দফতর। তা থেকে কয়েকটি নাম চূড়ান্ত করবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।

সরকারি হাসপাতাল যাতে ওই সব চিকিৎসকের পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না-হয়, নবান্ন থেকে সেই নির্দেশই গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী চান, ওই চিকিৎসকেরা আপাতত আংশিক সময়ের জন্য সরকারি হাসপাতালে যোগ দিন। ওঁদের মধ্যে যাঁরা শিক্ষক-চিকিৎসক, তাঁদের কিছু ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হবে। শিক্ষক-চিকিৎসকের ঘাটতি মেটাতেও নয়া প্রকল্প কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন, এমন এক শিক্ষক-চিকিৎসকের অভিজ্ঞতা, সাধারণ গরিব মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার যে-সুযোগ সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যায়, তা আর কোথাও নেই। ‘‘সরকারি চাকরি ছাড়ার পরে চিকিৎসক হিসেবে সেই আক্ষেপটা থেকেই গিয়েছে। তা ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের পড়ানোটাও একটা বড় অভিজ্ঞতা। সরকার যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে ফিরিয়ে নিতে চাইলে নিশ্চয়ই যাবো,’’ বলছেন ওই শিক্ষক।

অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তারদের সঙ্গেও যোগাযোগের কথা ভাবা হয়েছে। এ রাজ্যে মেডিক্যাল এডুকেশন সার্ভিসে যুক্ত শিক্ষক-চিকিৎসক এবং হেল্‌থ সার্ভিসের চিকিৎসকদের অবসরের বয়স এখন ৬৫ বছর। তা ৬৮ করার কথা চলছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘যাঁরা অবসর নিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই এখনও কর্মক্ষম তো বটেই। এমনকী শিক্ষক হিসেবেও তাঁদের জুড়ি মেলা ভার। তাঁদের কয়েক জনকে ফেরানোর কথা ভাবা হচ্ছে।’’ স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, এই বাছাইপর্বটা খুবই যত্নের সঙ্গে করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর এই ভাবনায় চিকিৎসক মহল খুশি। অনেকে অবশ্য মনে করছেন, নয়া স্বাস্থ্য বিল পাশের পরে বেশ কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সঙ্গে সরকারের যে-মতবিরোধ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতেই এই প্রয়াস।

বিমুখ ডাক্তারদের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবায় ফেরানোর এই তালিকায় এসএসকেএমের নিওন্যাটোলজি বিভাগের প্রক্তন প্রধান অরুণ সিংহ কিংবা বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজির শ্যামাপদ গড়াইয়ের নাম থাকছে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল বিস্তর। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, শ্যামাপদবাবুর নাম কোনও ভাবেই থাকছে না। তবে অরুণবাবুর ব্যাপারে দফতরেরই কয়েক জন কর্তা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছেন। এখনও সেই ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অরুণবাবু আপাতত কেন্দ্রীয় সরকারের রাষ্ট্রীয় বাল সুরক্ষা কার্যক্রমের জাতীয় উপদেষ্টা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement