মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বাংলার সঙ্গে ভাষা, পোশাক ও খাদ্যাভ্যাসের মিলের কথা টেনে ত্রিপুরায় ভোটের প্রচারে নেমে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার আগরতলায় মমতা বলেন, ‘‘যখন এখানে বিজেপি অত্যাচার করছে তখন কেউ ছিল না। আমি এসেছিলাম। এ আমার ঘরের মতো।’’ আজ মঙ্গলবার আগরতলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘রোড শো’ করার কথা রয়েছে তাঁর।
বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রচারে অভিষেককে সঙ্গে নিয়ে আগরতলায় পৌঁছেছেন তৃণমূলনেত্রী। বিমানবন্দরে বলেন, ‘‘এখানে বাংলা বলতে পেরে আমার ভাল লাগে। আমাদের একই খাওয়া-দাওয়া, একই রকম পোশাক।’’ ত্রিপুরার সঙ্গে পুরনো যোগাযোগের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসে থাকাকালীন সন্তোষমোহন দেব ও মনোরঞ্জন ভক্তের সঙ্গে এখানে ঘুরে ঘুরে কাজ করেছি। বহু কংগ্রেস কর্মীর সঙ্গে পরিচয় রয়েছে।’’
ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বাংলার প্রসঙ্গ তুলে কটাক্ষ করেছেন, ‘‘অত্যাচারীরা আবার অত্যাচারের কথা বলছে! সেটা বেমানান। পশ্চিমবঙ্গের নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এলাকায় ঢুকতে পারেন না কিন্তু ত্রিপুরায় তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন! এর চেয়ে আর বড় প্রমাণ কী হতে পারে?’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্র করের দাবি, ‘‘উনি অযৌক্তিক দাবি করছেন! যে সময়ের কথা উনি বলছেন, তখন তৃণমূলের সব লোক বিজেপিতে মিশে গিয়েছিল। আর আজ ত্রিপুরায় এসে অমিত শাহ তৃণমূলকে নিয়ে কিছুই বলেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিজেপিকে সাহায্য করার জন্যই তৃণমূল নেত্রী এই রাজ্যে এসেছেন।’’
ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ সেই দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে একটি ‘রোড শো’- এ অংশ নিয়ে শহর পরিক্রমা করবেন মমতা ও অভিষেক। পুরভোটের আগে অভিষেক-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ তুলে নেত্রী বলেন, ‘‘যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি। ত্রিপুরার মানুষকে এই কথাটাই বলতে এসেছি।’’
এ দিন রাজ্যে নির্বাচনী জনসভা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের। তবে মমতা ও অভিষেকের এ দিন প্রকাশ্য কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল না। বিমানবন্দর থেকে তাঁরা চলে যান উদয়পুরে ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে। সেখানে পুজো দিয়ে কিছুটা জনসংযোগের ঢঙেই এ দিন রাস্তায় তাঁর কনভয় দাঁড়িয়ে যায়। বিশ্রামগঞ্জ বাজারে চা- শিঙাড়া- পানের দোকানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়েছেন তাঁরা। উদয়পুরের প্রধান পুরোহিত চন্দন চক্রবর্তী জানান, “বিকেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে এসেছিলেন। দু’টি গোলাপি রঙের শাড়ি দিয়ে পুজো দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে ফুলের মালা ও ভোগও দিয়েছেন।”
মমতার সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের তৃণমূল সভাপতি পীযূষ বিশ্বাস, সাংসদ সুস্মিতা দেব ও এ রাজ্যে তৃণমূলের ভারপ্রাপ্ত নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতে দলের রাজ্য দফতরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। রবিবার রাতে গোমতী জেলার অমরপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক সুবীর সেন ঘোষ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন।