(বাঁ দিক থেকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্তি পাণ্ডে এবং প্রয়াত সাধন পাণ্ডে। —ফাইল চিত্র।
প্রয়াত নেতা সাধন পাণ্ডের স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডেকেই মানিকতলা বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠকে কুণাল ঘোষ, কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দারদের সঙ্গে সুপ্তিকেও ডেকেছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, সেখানেই তৃণমূলনেত্রী ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, আগামী ১০ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য মানিকতলা উপনির্বাচনে সাধন-জায়া সুপ্তিকেই প্রার্থী করা হচ্ছে। তবে তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও তা ঘোষণা করা হয়নি।
সুপ্তি শুধু প্রয়াত সাধনের স্ত্রী নন, তিনি মমতার সহপাঠীও ছিলেন। একটা সময়ে গুঞ্জন ছিল, সাধনের কেন্দ্রে তাঁর মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডেকে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল। কিন্তু শ্রেয়াকে নিয়ে দলেরই একটি বড় অংশের আপত্তি রয়েছে বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর। তার পর সম্প্রতি উল্টোডাঙা আবাসনে ডিজে তাণ্ডবের ঘটনাতেও শ্রেয়ার নাম জড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনা নিয়ে গত শনিবার দলের বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মমতা।
সাধন ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী। ২০২২ সালে তিনি প্রয়াত হন। তার পর থেকে মানিকতলায় উপনির্বাচন বকেয়া রয়েছে। ২০২১ সলের ভোটে মানিকতলায় সাধনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন বিজেপির কল্যাণ চৌবে। কল্যাণের দায়ের করা একটি মামলার জন্য মানিকতলায় উপনির্বাচন করা যাচ্ছিল না। সম্প্রতি ওই মামলা খারিজ করে দেয় আদালত। আদালত নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে উপনির্বাচন করতে হবে।
সোমবারও কুণাল-অতীনদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মমতা। ওই বৈঠকে মানিকতলা নিয়েই মূলত আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকেই মমতা বলে দেন, প্রার্থী তিনি স্থির করে ফেলেছেন। মঙ্গলবার আরও একটু বড় আকারে বৈঠক করেন তিনি। নবান্নে ডেকে নেওয়া হয়েছিল মানিকতলা বিধানসভা এলাকার পুরসভার কাউন্সিলরদেরও। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের বৈঠকে মমতা স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, দলের প্রার্থীকে জেতাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে নামতে হবে। কেউ যেন পছন্দ-অপছন্দ দেখতে না যান।
উত্তর কলকাতার রাজনীতিতে একটা সময়ে সাধনের সঙ্গে বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পালের আকচাআকচি ছিল রোজকার ঘটনা। সোমবারের বৈঠকে পরেশকেও ডেকেছিলেন মমতা। তবে বৈঠকে যাওয়ার পরে মমতাই পরেশকে দেখে বলেন, চোখ-মুখ দেখে তাঁর ঠিক লাগছে না। কুণালদের দায়িত্ব দেন পরেশকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যেতে। হাসপাতালে একাধিক পরীক্ষার পর দেখা যায় পরেশের মস্তিষ্কে অল্প অল্প করে রক্ত জমাট বাঁধছে। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় বেলেঘাটার বিধায়ককে। পরেশ আগের থেকে ভাল রয়েছেন। তবে হাসপাতালেই রয়েছেন তিনি। তাই মঙ্গলবারের বৈঠকে তিনি থাকতে পারেননি। তবে টেলিফোনে পরেশের সঙ্গে কথা বলেন মমতা।
মঙ্গলবার নবান্নের বৈঠক থেকে বেরিয়ে কুণাল বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কিছু আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে যখন যা জানাবার, দল জানাবে।’’ জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারের বৈঠক থেকে মানিকতলা উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অনিন্দ্য রাউতকে। কুণালকে করা হয়েছে আহ্বায়ক।