Mamata Banerjee

হাবড়ায় গিয়ে বালুর নাম নিলেন না মমতা, সরকারি সভা থেকে শুধু বললেন, ‘তৃণমূলের সবাই চোর নয়’

রেশন দুর্নীতি মামলায় গত অক্টোবরে তৎকালীন বনমন্ত্রী বালুর সল্টলেকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। দীর্ঘ তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৮
Share:

(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র হাবড়া। খাতায়-কলমে তিনি এখনও সেখানকারই তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু মঙ্গলবার হাবড়ার সরকারি সভা থেকে সদ্যপ্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালুর নাম উচ্চারণ করতে শোনা গেল না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

Advertisement

মমতার মঙ্গলবারের বক্তৃতার অধিকাংশ জুড়েই ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন তথা সিএএ। তবে বিরোধীরা বিবিধ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যে ভাবে তৃণমূলকে বিঁধছে, মমতা তার জবাব দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর নয়। দু’এক জন সিপিএম থেকে আসা কেউ কিছু করতে পারে। তাদের জন্য কোর্টে কেস চলছে।’’ পাশাপাশি, বিজেপিকে ‘সব থেকে বড় চোর’ বলে আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা।

রেশন দুর্নীতি মামলায় গত অক্টোবরের শেষে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা তৎকালীন বনমন্ত্রী বালুর সল্টলেকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। দীর্ঘ তল্লাশির পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিকালে বালুর বাড়িতে যখন ইডির তল্লাশি জারি ছিল, সেই সময়েই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে গর্জে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বলেছিলেন, ‘‘বালুর সুগার আছে। ওর যদি কিছু হয়ে যায়, তা হলে আমি ইডি আর বিজেপির বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’ তার পরেও এক বার জেলবন্দি জ্যোতিপ্রিয় সম্পর্কে মমতার বক্তব্য ছিল, ‘‘বালু কী করেছে? আমি বিশ্বাস করি না বালু চোর।’’

Advertisement

কিন্তু তিন মাসের বেশি কোনও মন্ত্রী জেলে থাকলে তাঁর আর মন্ত্রিসভায় কোনও দফতরের দায়িত্বে থাকার অধিকার থাকে না। সেই মর্মে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজভবন থেকে জানানো হয়, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জ্যোতিপ্রিয়ের অধীন বন দফতরের দায়িত্ব দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদাকে। জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে থাকা শিল্প পুনর্গঠন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে। ঘটনাচক্রে, তার আগেই বালুর পরিবারের তরফে মমতার কাছে আবেদন করা হয়েছিল তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। কারণ, জামিনের আবেদনের ক্ষেত্রে ‘প্রভাবশালী’ তকমা জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘অন্তরায়’ হচ্ছে।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার করার ছ’দিনের মধ্যে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারিত করা হয়েছিল। কিন্তু জ্যোতিপ্রিয় ছিলেন স্বপদে। তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেও আলোচনা ছিল। এ প্রসঙ্গে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে পরিপার্শ্বে যা দেখা গিয়েছিল তাতে দল তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিয়েছিল। অভিষেক এ-ও বলেছিলেন, ‘‘এজেন্সি কাউকে চোর বলল মানে তিনি চোর হয়ে গেলেন এমন নয়। ইডি, সিবিআই ভগবান নয়।’’ পাশাপাশিই, অভিষেক ইঙ্গিতে বুঝিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি মানে হবে না, তা-ও নয়। ওই কথা বলার পক্ষকাল কাটার আগেই বালুকে সরতে হয় মন্ত্রিসভা থেকে। মঙ্গলবার বালুর নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই বালুর নাম এক বারও নিলেন না মমতা। যাকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই ব্যাখ্যা করা হচ্ছে শাসক শিবিরের অন্দরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement